ঐতিহাসিক রোজগার্ডে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এখানেই দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশ সরকার সেই ঐতিহাসিক রোজগার্ডেন কিনে নিয়েছে। ভবনটিকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে গণভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে সম্পত্তির বর্তমান মালিক ও তার সন্তানদের কাছ থেকে এ সম্পত্তি ক্রয়ের রেজিস্ট্রিকৃত দলিল গ্রহণ করেছেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সচিব মো. শহিদুল্লাহ খন্দকার, সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
‘সরকারি ক্রয় আইন’ অনুযায়ী ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে বর্তমান মালিকের কাছ থেকে এ স্থাপনাটি ক্রয় করা হয়েছে।
জানা যায়, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ৮ আগস্ট রোজগার্ডেন ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করে। এটি বর্তমানে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। চলতি অর্থবছরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ওই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাফিজুর রহমান সভা শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘সরকার ‘সরকারি ক্রয় আইন’ অনুযায়ী বাড়িটি ক্রয় করছে।’
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বর্তমান মালিকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোজগার্ডেনের মূল্য ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী আজ এ ঐতিহাসিক স্থাপনা ক্রয়ের রেজিস্ট্রিকৃত দলিল গ্রহণ করলেন। এ সময় তিনি একটি চেক এবং ঐতিহাসিক ভবনের বিনিময়ে রোজগার্ডেনের মালিককে নগরীর গুলশানে ২০ কাঠা জমিসহ একটি একতলা ভবন বিক্রির একটি রেজিস্ট্রিকৃত দলিল হস্তান্তর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী রোজগার্ডেনকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করার জন্য এক হাজার এক টাকা টোকেন মূল্যে এটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর প্রধানমন্ত্রী কাছ থেকে বাড়ির দলিল গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজগার্ডেনের একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। পুরান ঢাকার ইতিহাস তুলে ধরতে ঐতিহাসিক রোজগার্ডেনকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে। সরকার এর আগে নগর ভবনে একটি জাদুঘর স্থাপন করেছে। তবে এখন সেই জাদুঘরটি রোজগার্ডেন ভবনে স্থানান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, এই দলের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে। এই ঐতিহাসিক ভবনটি যথাযথভাবে সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন স্থাপনা নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। ভবনটির মূল কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে এটি সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ঋষিকেশ দাস ১৯৩১ সালে পুরান ঢাকার টিকাটুলির কে এম দাস লেনে ২২ একর জমির ওপর এটি নির্মাণ করেন।