অপরাধী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-06 23:26:56

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাধীকে অপরাধী হিসাবেই দেখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সে যে দলের হোক, যে কেউই হোক, অপরাধী অপরাধীই। কাজেই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে সমাজটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে, সেটাই আমরা চাই।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে ১১৬তম, ১১৭তম এবং ১১৮তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে শাহবাগ বিসিএস প্রশাসন একাডেমীতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।

গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিসিএস প্রশাসন একাডেমী প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, বিসিএস প্রশাসন একাডেমীর রেক্টর বদরুন নেছা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১১৬তম, ১১৭তম ও ১১৮তম কোর্সে অংশ নেয়া প্রশিক্ষণার্থীদের পক্ষ থেকেতিন জন অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অংশগ্রহণকারী মোট ১১৬ জন প্রশিক্ষণার্থী সবাই সফলভাবে উত্তীর্ণ হোন। এছাড়া তিনজন প্রশিক্ষণার্থী রেক্টর অ্যাওয়ার্ডস লাভ করেন। এরা হলেন জিসান বিন মাজেদ, হাফিজুল হক এবং তারিকুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী রেক্টর অ্যাওয়ার্ডস তুলে দেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে পাকিস্তান আমলে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্দোলনের বিভিন্ন পটভূমি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করি। আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; আমাদের যে রিসার্চ সেল আমরা সবসময় বাংলাদেশকে কিভাবে জাতির পিতার আদর্শে গড়ে তুলবো সেই লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন কাজ করি।

১৫ আগস্টের পর দীর্ঘ ২১ বছর আমরা সরকার গঠন করি। সরকার গঠনের পর থেকে আমরা দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়ার প্রসঙ্গসহ পরবর্তীতে টানা মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ফলে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে। যে বাংলাদেশে প্রত্যেক মানুষ সম্মানের সাথে বসবাস করবে। যে বাংলাদেশ সারাবিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে সম্মান নিয়ে চলবে। কারণ জাতির পিতা বলেছিলেন, ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না। আমরা কিন্তু সর্বত্র ভাবে চেষ্টা করেছি। এবারও আমরা বড় বাজেট দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করেছি কারো কাছে হাত পেতে আমরা চলবো না।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আগামী দিনে খাদ্যাভাবের কথা চিন্তা করে দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানানোর কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে সারাবিশ্বব্যাপী যেকোনো সময় আমরা দেখতে পারি, মহা-দুর্যোগ চলে আসতে পারে। সেই সময় বাংলাদেশের মানুষে যেন খাদ্যে কোনো কষ্ট না পায়। আমাদের জমি সীমিত কিন্তু আমরা রিসার্চ করে আমাদের উৎপাদন বাড়িয়েছি। এটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা একটা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসাবেই গড়ে তুলবো। কতগুলো সমস্যা দেখা দেয়, যেমন হঠাৎ ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, কিশোর গ্যাং, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি; এর বিরুদ্ধে আপনাদের আরো যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সেখানে কারো মুখ চিনে না, যারাই অপরাধী অপরাধীকে অপরাধী হিসাবেই দেখবেন। এটাই আমার কথা।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি করেছে। আমরা আরো উন্নতি করতে চাই, এই দেশটাকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে। আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন প্রযুক্তি নির্ভর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বলে যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন এবং সারা বাংলাদেশে যোগাযোগের একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান।

এজন্য করোনার মাঝেও সরকার যে প্রজেক্টগুলি নিচ্ছে এবং যা বাস্তবায়ন হচ্ছে সেগুলো যাতে ভালভাবে মানসম্মতভাবে হয় সে বিষয়েও সবাইকে দেখভাল বা নজর রাখার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের জীবনটাকে স্থবির করেছে, সারাবিশ্বকে স্থবির করেছে। অনেক মানুষকে আমরা হারিয়েছি। আর এটা যেন বিস্তার লাভ করতে না পারে তার জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। কারণ দ্বিতীয় যে ঢেউটা আসছে, সেটা কি পর্যায়ে যাবে এখনো আমরা জানি না। অনেক দেশ এখন তারা অলরেডি লকডাউন করে ফেলেছে, অনেকে কারফিউ দিচ্ছে আমরা এখনো সহনশীল অবস্থায় আছি কিন্তু আমাদেরকে খুব সাবধানে চলতে হবে।

করোনার ভ্যাকসিন ক্রয় করার অগ্রিম বুকিং দেয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়েও অবহিত করেন তিনি।

প্রশিক্ষণার্থী সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষকে ভালবেসে তাদের জন্য কাজ করবেন এই মনোভাব নিয়েই আপনারা আপনাদের কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর