বেনাপোলে ভূমিহীন দেখিয়ে স্বচ্ছল পরিবারে খাস জমি বণ্টনে ১৪৪ ধারা জারি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর) | 2023-08-26 15:29:34

বেনাপোলে ভূমিহীন দেখিয়ে বিত্তবান ও স্বচ্ছল পরিবারের মধ্যে খাস জমি বরাদ্দে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে বেনাপোল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আবু সাঈদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করলে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে।

এদিকে বরাদ্ধকৃত খাস জমি কেনা সম্পদ দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, তাদের ক্রয়কৃত ৩৭ শতাংস জমির মামলা চলাকালীন সময় ওই নায়েব অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে কয়েকজনকে এ জমি বরাদ্দ দেয়।

জানা যায়, বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া মৌজায় তিন তলা বাড়ি থাকা সত্বেও সেই সব পরিবারকে জমি বরাদ্দ দিয়ে সরকারি নিয়ম নিতি উপেক্ষা করেছেন নায়েব আবু সাঈদ। এতে যে কোন সময় ওই জমি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে ওই পরিবার।

বেনাপোল পোর্ট থানার ছোট আঁচড়া গ্রামের আব্দুর রহমান, মাসুদুর রহমান, মাহবুবুবর রহমান (পিতা আলী আকবর সফি উদ্দিন) অভিযোগ করে বলেন, তার পিতা ১৯৭৮ সালে বড় আঁচড়া মৌজায় ছোটআঁচড়া মাঠে গাতিপাড়া গ্রামের রবিউল ও সামাউল ইসলাম এর নিকট থেকে ৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করে। ওই জমি ২৪/০৫/১৯৭৮ ইং তারিখে রেজিস্ট্রি হয়। যার খতিয়ান নং ১১০৩ আর এস নম্বর ৮৭৮,৯৭৫,৯৭৩। ১৯৯০ সালে মাঠ জরিপে ওই জমি আমাদের মাঠের পর্চা দিলেও প্রিন্ট পর্চা আমাদের দেয়নি। এই সুযোগে বেনাপোল ভূমি অফিসের তহশিলদার আবু সাঈদ ৮ জনকে ওই জমি বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে। সরকারি বিধিমালায় আছে কোন জমি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলকালে ওই জমি বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। তারপরও আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে আবু সাঈদ সাহেব বড় অংকের অর্থের মাধ্যেমে এ জমি বরাদ্দ দেয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে। জমির প্রিন্ট পর্চা না পাওয়ায় ওই জমির রেকর্ড সংশোধন মামলা করা হয় । যার মামলা নং ৫৪/১৬ তারিখ ১৩/০৭/২০১৬ ।

অভিযোগকারীরা আরো বলে, যে ৮ জন এর নামে জমি বরাদ্দ দিয়েছে তারা সকলে বিত্তশালী ও স্বচ্ছল পরিবারের। জমির বরাদ্দ যাদের নামে দিয়েছে তারা হলো বেনাপোল পোর্টথানার গাজিপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে শের আলী, ছোট আঁচড়া গ্রামের শের আলীর মেয়ে মনোয়ারা খাতুন, একই গ্রামের লিয়াকত আলীর মেয়ে ছকিনা খাতুন, বড়আঁচড়া গ্রামের মনির হোসেন এর ছেলে বাবু ,বড়আচড়া গ্রামের বাহাদুর হোসেনের মেয়ে বিউটি খাতুন, নামজগ্রামের আব্দুল কাদের এর ছেলে নুর ইসলাম, গাতিপাড়া গ্রামের বরকত এর মেয়ে আমেনা খাতুন, ছোটআচড়া গ্রামের ছবেদ আলীর ছেলে লিয়াকত আলী। এর মধ্যে শের আলীর তিন তলা একটি বাড়ি রয়েছে এবং অন্যান্য সকলের বাড়ি ও জমি আছে। আমরা এ সংক্রান্ত বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় ভূমি কর্মকর্তা আবু সাঈদ এর নামে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। যার নাম্বার ৩২৮, তারিখ ৯/১২/১৮। এছাড়া গত ১৪/০১/২০ ইং তারিখে বিজ্ঞ যশোর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত যাতে কোন রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ না হয় তার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আমরা ওই ৩৭ শতাংশ জমি ১৯৭৮ সাল থেকে ভোগ দখল করে আসছি।

বেনাপোল ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আবু সাইদ তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তাদের নামে কোন জমি নেই। সরকারি বিধি মালা অনুযায়ী এসব জমি বরাদ্দ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর