'স্বাস্থ্যবিধি না মানাই করোনার সেকেন্ড ওয়েভের কারণ'

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 14:46:59

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার সেকেন্ড ওয়েভের (দ্বিতীয় ঢেউ) কারণ হলো আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। আমরা একটু বেপরোয়া হয়ে চলছি। আমরা মাস্ক ব্যবহার করছি না। আমরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে গিয়েছি।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও কিছুটা সংক্রমণ বৃদ্ধি দেখছি। গত দশ-পনেরো দিন যাবত মৃত্যুহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়, মানুষ পিকনিকে যায়। কিছুদিন আগে দেখেছি কক্সবাজারে সমুদ্রের পাড়ে লাখ লাখ মানুষ। সেখানেই মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে।

রোববার (২৯ নভেম্বর) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের (বিপিএমসি) উদ্যোগে 'করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও ভ্যাকসিন' বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, শীতকালে অনেক অনুষ্ঠান হয়। এই সময় অন্যান্য রোগও বেশি হয়। এই কারণে আমাদেরও সেকেন্ড ওয়েভের আশঙ্কা রয়েছে যেটা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। কিন্তু আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক না পরার কারণে জরিমানা করা হয়েছে। মানুষকে জরিমানা করা আসলে কষ্ট দেয়ার জন্য নয়, সচেতন করার জন্য।

বেসরকারি মেডিকেলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের বিভিন্ন হাসপাতালের কথা বলেছেন, প্রস্তুতির কথাও বলেছেন। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল মিলে ইনশাআল্লাহ আমরা সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলা করতে পারব। বরাবরই প্রাইভেট মেডিকেল হাসপাতালগুলো, ক্লিনিকগুলো, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো আমাদেরকে সহযোগিতা করে আসছে। আশা করি আগামীতেও তারা বেশি বেশি সহযোগিতা করবে। আমরাও তাদের সব প্রয়োজনে পাশে থাকবো।

করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশর অবস্থা অন্য দেশের থেকে অনেক ভালো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইউরোপ আমেরিকা এবং পাশের দেশ ভারতে দেখুন তারা অনেক উন্নত দেশ। টেকনোলজির দিক থেকে আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। তার পরেও তাদের বেহাল অবস্থা, তাদের মৃত্যুহারও অনেক বেশি। আমরা সীমিত সম্পদ সীমিত ব্যবস্থা নিয়েই অনেক ভালো করেছি। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন আমাদের ভালো চলছে। প্রধানমন্ত্রী সকল সেক্টরে প্রণোদনা দিয়েছেন। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের কথা ভেবে শুধু শিক্ষা কার্যক্রম আমরা সম্পূর্ণ রূপে শুরু করতে পারিনি। তবে অনলাইনে ক্লাস হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, ডব্লিউএইচও অনেক বার চিকিৎসা পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে। করোনার শুরুর দিকে এটা মোকাবিলায় ব্যবহৃত অনেক কিছুই আমাদের ছিল না এটা দোষের কিছু নয়। প্রথমে আমরা জানতাম না আসলে কি কি লাগবে। শুরুতে আমরা ভাবতাম বেশি বেশি ভেন্টিলেটর লাগবে। কিন্তু আসলেই প্রয়োজন ছিল সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমের, নজেল, ক্যানোলা, বেড বাড়ানো, পিপিই ও ল্যাবের। এই বিষয়গুলো আমরা আস্তে আস্তে শিখেছি। অন্যান্য দেশ থেকে এবং ডব্লিউএইচও থেকে। কিন্তু আমরা দেরি করিনি তড়িৎ গতিতে সম্পন্ন করেছি।

ভ্যাকসিনের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করছে। এখনো কোনো ভ্যাকসিন বাজারে সেভাবে আসেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিলে প্রথম ধাপেই আমরা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবো।

দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রস্তুতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আইসিইউ বাড়াতে হবে, বেড বাড়াতে হবে। করোনা রোগীদের পাশাপাশি যাতে অন্যান্য রোগীদেরও যাতে ভালো সেবা দেয়া যায়। এরই মধ্যে সব সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আপনারাও (বেসরকারি হাসপাতাল) সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন।

বিটিএমসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ আলী খুরশিদ আলম প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর