জাহাজে করে দেড় হাজারের বেশি রোহিঙ্গার ভাসানচর যাত্রা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 00:26:53

কক্সবাজারের উখিয়াসহ বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে আসা দেড় হাজারের রোহিঙ্গাকে নিয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মোট সাতটি জাহাজ।

শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার বোট ক্লাব, আরআরবি ও কোস্টগার্ডের জেটি থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর যাত্রা শুরু হয়।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ছয়টি এবং সেনাবাহিনীর একটি জাহাজ রয়েছে এই বহরে। মোট জাহাজে মোট ১ হাজার ৬৪২ জনকে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে। সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের জাহাজে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়।

এর আগে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বুধবার সন্ধ্যা থেকে কিছু রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট পয়েন্টে চলে আসে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আসা শুরু করে অন্যরাও। আগে থেকে প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়। এরপর উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হয়। উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে বাসে করে তাদের চট্টগ্রামের বিএএফ জহুর ঘাটির বিএএফ শাহিন স্কুল ও কলেজের ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। রাতে তারা সেখানেই অবস্থান করেন।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিক্রিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কাউকে জোর করে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে না, যারা স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাদের নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম ঘিরে বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপ ঘুরে আসে ২২টি এনজিওর প্রতিনিধি দল। ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে মজুত করা হয়েছে ৭০ টন খাদ্যসামগ্রী। ২২ এনজিওর প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করে সরকারের পরিকল্পিত আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।

নৌ বাহিনীর জাহাজ দিয়ে রোহিঙ্গাদের দুইমাস খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। এরপর তারা নিজেরাই রান্না করে খেতে পারবেন।

বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝিরা জানান, অনেক রোহিঙ্গা পরিবার স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে উদ্যোগী হচ্ছে। তাদের অনেকে বুধবার সন্ধ্যায় ট্রানজিট পয়েন্টে চলে যায়। বাকিরা আজ সকালে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক একটি এনজিওর কর্মকর্তা বলেন, বার বার অভিযোগ উঠেছে এনজিওদের প্ররোচনায় রোহিঙ্গারা ভাসানচর যাচ্ছে না। তাই এবারের যাত্রায় কোন এনজিও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে নয়।

কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা ভাসানচর দ্বীপে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এ কারণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে এলাকা রক্ষা করতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে সাইক্লোন সেল্টার, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা অবকাঠামো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর