লালমনিরহাট মুক্ত দিবস আজ, এবার নেই কোন আয়োজন

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট | 2023-09-01 10:34:20

৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস। প্রতিবার দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সড়কে তোরণ নির্মাণসহ বিজয় র‍্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। তবে এবার করোনা প্রভাবে এবার তেমন কোন আয়োজন করেনি।

১৯৭১ সালের এই দিনে লালমনিরহাট জেলাকে শত্রুমুক্ত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দূর্বার প্রতিরোধে পাক হানাদারবাহিনীর পতন করেন। এক পর্যায়ে চূড়ান্ত বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট ঘিরে ফেললে অবস্থা বেগতিক দেখে এই দিনে ভোর ৬টায় লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাক সেনা, রাজাকার আলবদর ও তাদের দোসররা দুটি স্পেশাল ট্রেনে করে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে পালিয়ে যায়।

হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ। ছবি: বার্তা২৪.কম 

তিস্তা নদী পার হওয়ার পরে পাক সেনারা তিস্তা রেল সেতুতে বোমা বর্ষণ করে সেতুর মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। লালমনিরহাটে ৭১-এর এই দিনে এখানে সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির উল্লাস। লালমনিরহাট শত্রুমুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে লোকজন ছুটে আসতে থাকে শহরের দিকে। সন্ধ্যার মধ্যে শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় এলাকায় লোকে পূর্ণ হয়ে যায়। স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহর ও আশ-পাশের গ্রাম। আনন্দে উদ্বেলিত কণ্ঠে স্বদেশের পতাকা নিয়ে ছুটোছুটি করতে থাকে তরুণ, যুবক, আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলই।

এদিন সারাদিন উত্তেজনা নিয়ে লালমনিরহাট শহর, জনপদ ও লোকালয়ের মানুষ জড়ো হতে থাকে। পরে জেলা শহরের বিভিন্নস্থানে আনন্দ মিছিল ও পরদিন ৭ ডিসেম্বর বাঁধ ভাঙা জোয়ারের জয় বাংলা ধ্বনি দেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের কালো রাত্রিতে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লালমনিরহাটের মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় এ জেলা। মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৬নং সেক্টর শুধু বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর সেটি অবস্থিত লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে।

শহীদ মিনার। ছবি: বার্তা২৪.কম

এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, বিমান বাহিনীর এম খাদেমুল বাশার। ৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর সাথে সর্বস্তরের মানুষ শহরে প্রবেশ করে ও স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. এস.এম. শফিকুল ইসলাম কানু বলেন, প্রতিবারের এদিনটি ঘিরে যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন, সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি নেন। তবে এবার করোনাভাইরাসের কারণে ছোট আকারে করা হয়েছে। তাছাড়াও ভার্চুয়াল আলাপ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর