বেনাপোল বন্দর সড়ক বন্ধ করে রেলের পণ্য খালাসে বেড়েছে পথচারীদের দুর্ভোগ ও মৃত্যু ঝুঁকি। আমদানি, রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলেও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পথচারী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুভোর্গ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন দফতরে ধর্না দিয়েও কাজ না হওয়ায় এ দুর্ভোগ যেন নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছেন, পণ্য লোড,আনলোডের জন্য বন্দরের দুই পাশে ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। বাস্তবায়ন হলে চলমান সমস্যার সমাধান হবে।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে আগে কেবল স্থলপথে ভারতের সাথে আমদানি,রফতানি হলেও বর্তমনে খরচ সাশ্রয়ী হওয়াতে পাল্লা দিয়ে রেলপথে চলছে আমদানি বাণিজ্য। তবে সংকীর্ণ রেলপথ আর ইর্য়াড না থাকায় ব্যস্ততম সড়ক বন্ধ করে বন্দরে পণ্য খালাস করছে রেল কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় দিন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ করে রেল দাঁড়িয়ে থাকায় পথচারীরা যাতায়াত বিঘ্ন ঘটছে। অভার ব্রিজ না থাকায় বাধ্য হয়ে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ট্রেনের নিচ দিয়ে চলাচল করতে হয়। আবার রাস্তা পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ছে পণ্যবাহী ট্রাকসহ সাধারণ যানবাহন। এলাকাবাসীর যাতায়াত ঝুঁকিমুক্ত করতে বিভিন্নভাবে অভিযোগ জানালেও কোন কাজে আসছে না। ফলে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পথচারীদের আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের নিচ দিয়ে পথ পার হতে হচ্ছে।
দুভোর্গের শিকার পথচারীরা জানান, সড়ক বন্ধ করে রেল দাঁড়িয়ে থাকায় তাদের কর্মস্থলে যাতায়াত আর ছেলে,মেয়েদের লেখা-পড়ায় রাস্তা পারাপারে জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে। কখন ট্রেন ছেড়ে দেয় এ আতঙ্ক নিয়ে ট্রেনের নিচ দিয়ে চলাচল করতে হয়। প্রায় এক বছর ধরে তাদের এ কষ্ট ভোগ করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার হচ্ছেনা।
আমদানি-রফতানি পণ্য বহনকারী ট্রাক চালক ও ব্যবসায়ীরা বার্তা২৪.কম’কে জানান, রাস্তা বন্ধ করে দীর্ঘ সময় ধরে রেল দাঁড়িয়ে থাকায় তারা বাণিজ্যিক কাজে যাতায়াত করতে পারেন না আটকা পড়ে পণ্যবাহী ট্রাক।
বেনাপোল বন্দরের রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, রেলের পণ্য বেনাপোল বন্দরে খালাস করার জন্য যে অবকাঠামো প্রয়াজন তা এখনও পড়ে উঠেনি। বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অনুরোধে রেল সড়কে ট্রেন দাঁড় করিয়ে পণ্য খালাসে পথচারীদেরও দুভোর্গ হচ্ছে। তবে কিছু দিনের মধ্যে ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শুরু হবে। তখন এ দুভোর্গ আর থাকবে না।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বার্তা২৪.কম’কে জানান, করোনার কারণে স্থল পথে পন্য আমদানিতে নানান সমস্যার কারণে রেল পথে পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। এতে রেলপথে পণ্য খালাসে মানুষের কষ্ট কেড়েছে। তবে বন্দরের দুই ধার দিয়ে তাদের রেলপথ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
জানা যায়, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দরের রেল ও স্থল পথে আমদানি পণ্য থেকে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হচ্ছে। তবে বাণিজ্যিক স্বার্থে এখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো আজও উন্নয়ন হয়নি।