লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বাল্যবিয়েতে রাজি না হওয়ায় ইয়াসমিন আক্তার (১৫) নামে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে মারধর করা হয়েছে। পরে অভিমানে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে সে।
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ইয়াসমিন। সে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে ও সৈয়দপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, ইয়াসমিন গত বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাশ করতে পারেনি। এ জন্য সে এ বছরও একই শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। এরমধ্যে বাবা ইসমাইল ও মা লাকী বেগম তাকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। এক পর্যায়ে ফুফাতো ভাই কুয়েত প্রবাসী রাশেদের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। রাশেদ উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের সমাষপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে। তিনি এর আগেও বিয়ে করেছেন। প্রায় ৩ বছর আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
এদিকে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই ছাত্রীকে তার মা-বাবা মারধর করে। এতে অভিমান করে পরদিন সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বুধবার দুপুরে ইয়াসমিনের মরদেহ উপজেলার দত্তপাড়ার সৈয়দপুরের বাড়িতে আনা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আহসানুল কবির রিপন জানান, বাল্যবিয়ে দেওয়ার জন্য ওই ছাত্রীকে পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়। এতে অভিমানে বিষপান করে আত্মহত্যা করে সে।
দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।