মিরসরাইয়ে একদিনে ৯০ প্রকেল্পর উদ্বোধন

, জাতীয়

মোহাম্মদ ইউসুফ, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মিরসরাই, চট্টগ্রাম | 2023-08-29 21:48:28

ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের নৌকাই ছিলো যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন। ফেনী নদীর ওপর তৈরি হতে যাচ্ছে নতুন একটি সেতু। ধুম সেতু নামের ওই সেতু নির্মাণের উদ্যোগের ফলে নদীর দু’পারের মানুষের যোগাযোগে এক নতুন মাত্রা সূচিত হতে যাচ্ছে। আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে ২৫২ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করবেন মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

জানা গেছে, ফেনী নদীর ওপর সেতু ছাড়াও একই দিন মিরসরাইয়ের মোট ৯০টি জনগুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২শ কোটি টাকা। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে মিরসরাইয়ের ধুম ইউনিয়নের ফেনী নদী এলাকায় সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন। পরে বারইয়ারহাট পৌরসভার ৩৫টি প্রকল্পের, মিরসরাই পৌরসভার ১০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্বোধন করবেন। বেলা ১২টার দিকে উপজেলা সদরে এসে ৪৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন।

মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, ফেনী নদীর ওপর জনগরুত্বপূর্ণ এ সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে। এটি বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সুরমা এন্টার প্রাইজ ও হক ট্রেডার্স জেবি। কার্যাদেশ অনুযায়ী এটির কাজ শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় ৩২ মাস। অর্থ্যাৎ আগামী ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে এটি যানবাহন ও সাধারণ মানুষের পারাপারের জন্য খুলে দেয়া হবে।

ধুম সেতু নামের ওই সেতু নির্মাণের উদ্যোগের ফলে নদীর দু’পারের মানুষের যোগাযোগে এক নতুন মাত্রা সূচিত হতে যাচ্ছে

ধুম সেতু বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এটি সরকারের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের একটি ধারাবাহিক উন্নয়ন প্রকল্প।  প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ।’

নতুন এ সেতু মিরসরাই-ছাগলনাইয়া উপজেলা এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবে উল্লেখ করে সরকারের সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘একসময় দেখতাম নদীর ওপারের আলকদিয়া গ্রামের মানুষ অনেক কষ্টে নদী পার হতো। আশা করছি মানুষের এতদিনের কষ্ট দূর হবে। তারা এ সেতুর মাধ্যমে মিরসরাইয়ে পার হয়ে এখানকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করতে পারবে।’ 

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার গোপাল ইউনিয়নের আলকদিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ফেনীর নদীর ওপর সেতু নির্মাণের খবরে স্থানীয়দের মধ্যে উচ্ছাসের কমতি নেই। এতদিন পর তাদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুঁজবে এমন খবরে তারা আনন্দে আত্মহারা। গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, কৃষক, শিক্ষার্থী সকলেই উচ্ছ্বসিত।

স্থানীয় আলকদিয়া নূরানী তালিমুল কোরআন মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আলকদিয়া গ্রামের ছেলে মেয়েরা এতদিন নৌকাযোগে নদী পার হয়ে স্কুল-মাদরাসায় যেতো। এখানে উন্নত চিকিৎসাতো দূরে থাক, সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থাও নেই। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ায় আমরা বেশ খুশি। আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য আমরা দোয়া করছি।’

ওইদিন সরেজমিনে আলকদিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলার সময় তারা তাদের বক্তব্যে বারবার একটি দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তা হল ফেনী নদীর ওপর নির্মাণাধীন এ সেতুর নাম ‘ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সেতু’ হিসেবে যেন নামকরণ করা হয়।

আলকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘সেতু হবে শোনার পর আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন থেকে আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুল কলেজে পড়তে পারবে। আমরা চাই আমাদের এ সেতুর নাম ‘ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সেতু’ হিসেবে নামকরণ করা হোক।’

এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতু নির্মিত হচ্ছে। ফেনী নদীর ওপর নির্মাণাধীন এ সেতুর কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। ওইসময় যান চলাচল ও সাধারণ জনগণের পারাপারের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী কামরুজ্জামান আরও জানান, বুধবার সকালে মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মোট ৯০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থরের ফলক উন্মোচন করবেন। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে প্রায় ২শ কোটি টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর