ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে বেনাপোলে বাণিজ্য ব্যাহতের আশঙ্কা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর) | 2023-08-26 03:58:07

বেনাপোল বন্দরে আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য, জাতীয় পঁচনশীল কাঁচামাল ও পণ্য খালাসের কার্যক্রম ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড থেকে সরিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ টিটিবি আই মাঠে নেওয়ার পরিকল্পনায় মারাত্মকভাবে বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী মহল। তবে দুই পক্ষই তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। দ্রুত সমাধানে না আসলে বাণিজ্য ব্যাহতের পাশাপাশি কাস্টমস ও বন্দরের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেনাপোল স্থলবন্দরকে একটি চিঠি দিয়ে কাঁচামাল খালাসের কার্যক্রম বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড থেকে সরিয়ে টিটি আই মাঠে সম্পাদন করার নির্দেশনা দেন।

জানা যায়, বেনাপোল বন্দরের যে পণ্য আমদানি হয় তার বড় একটি অংশ রয়েছে খাদ্যদ্রব্য, জাতীয় বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল। যা থেকে প্রতিদিন সরকারের প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা রাজস্ব আসে। কাঁচামাল খালাসের জন্য বন্দরের ৩১ নম্বর ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড রয়েছে। যেখানে ঝড়, বৃষ্টি থাকলেও পণ্য খালাস করতে যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য টিনের ছাউনি দিয়ে শেড নির্মাণ এবং শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য স্থান রয়েছে। রয়েছে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অফিস। কিন্তু হঠাৎ করে কাস্টমস হাউজ সিদ্ধান্ত নেয় ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে আমদানিকৃত মোটরসাইকেল রাখা হবে। আর টিটিবি আই নামে খোলা আকাশের নিচে ইয়ার্ডে কাঁচামাল খালাস করা হবে। কাস্টমস এ নিয়ে বন্দরকে চিঠিও দেয়। তবে কাস্টমসের এমন হঠকারিতামূলক সিদ্ধান্তে বাধ সাধে বন্দর কর্মকর্তারা। বন্দরের ব্যবসায়ী মহল আর শ্রমিকরাও কাস্টমসের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কাঁচামালের মাঠে মোটরসাইকেল নামানোর কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করে। এনিয়ে কাস্টমস আর বন্দরের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়। কাস্টমস চেষ্টা চালাচ্ছেন তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আর বন্দর আইন ও যুক্তি দেখিয়ে করছেন এমন অনিয়মের বিরোধিতা।

বেনাপোল বন্দর

কাঁচামাল আমদানি কারক কামাল হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মোটরসাইকেল আমদানিকারকরা যেমন সরকারের রাজস্ব দেয় তেমনি কাঁচামাল আমদানিকারকেরা রাজস্ব দিচ্ছে। কাউকে সুবিধা দিতে আর একজন ব্যবসায়ীকে কেউ হয়রানি বা ক্ষতিগ্রস্ত করবেন এটা ঠিক না। আগে কাঁচামাল খালাসের জন্য টিটিবি মাঠে পরিবেশ তৈরি করুক তাহলে আমাদের সেখানে পণ্য খালাসে সমস্যা নাই।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে জানান, বন্দরের এক একটি ইয়ার্ড পণ্য খালাসের সুবিধায় এক এক রকমভাবে তৈরি করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন না করে হঠাৎ এক জায়গায় নামানোর পণ্য আরেক জায়গায় খালাস করা হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিষয়টি দুই পক্ষের বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কাঁচামাল খালাসের জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড তৈরি করা। অবকাঠামোহীন খোলা মাঠে কিভাবে খাদ্যদ্রব্য, জাতীয় পণ্য খালাস হবে? এতে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ে এ বন্দর ছাড়বেন। এছাড়া বন্দরের আইন লঙ্ঘন হবে। এক্ষেত্রে পণ্য খালাসের সুবির্ধাতে বন্দরে নতুন ওয়ারহাউজ নির্মাণ আর অবকাঠামো বাড়ানো যেতে পারে। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, বৃহত্তর বাণিজ্যের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাঁচামালের চেয়ে মোটরসাইকেলে সরকারের অনেক বেশি রাজস্ব আসবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।।

এ সম্পর্কিত আরও খবর