লন্ডন রুট বন্ধের বিষয়ে সরকারের দিকে তাকিয়ে বিমান

, জাতীয়

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 16:53:40

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন দেখা দিয়েছে। খুবই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাসটি। লন্ডনসহ দেশটির বিভিন্নর এলাকায় এটি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে।

এই অবস্থায় লন্ডনে ফ্লাইট পরিচালনা করা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এই রুটটিতে ঢাকা থেকে এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, টার্কিশ এয়ার ও ইত্তেহাদ যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।

এরই মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, নেরারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ছাড়াও ৪০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী ভারত, সৌদি আরবও যুক্তরাজ্যে কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করছে না। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বিভিন্ন দেশ অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলেও বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে তারা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্থিতি বুঝে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

করোনার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সকল ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল গত মার্চে। এরপর জুলাই মাস থেকে একে একে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সমূহ স্বল্প পরিসরে চালু করে বিমান।

এ বিষয়ে বিমানের ম্যানেজিও ডিরেক্টর ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোকাব্বির হোসেনের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে তারা কি চিন্তাভাবনা করছেন। কিন্তু বিষয়টি বিমানের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিমান গুরুত্বপূর্ণ এই রুটটি বন্ধের বিষয়ে নিজে থেকে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। সরকার যদি রুট বন্ধ করার ঘোষণা দেয়, তাইলে তারা সেই নির্দেশনা মেনে চলবেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে বিমানের এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কম’কে বলেন, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে বিমান ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয়। তবে সত্যি বলতে বিমান নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে কোনো দেশের ফ্লাইট বন্ধ করেনি। সংশ্লিষ্ট দেশসমূহ ফ্লাইট বন্ধ করে দিলে বিমান বাধ্য হয়ে তা বন্ধ করেছে।

ঢাকা-লন্ডন-ঢাকা রুটের ক্ষেত্রেও বিমান আগের নিয়মই অনুসরণ করতে চাইছে। অর্থ্যাৎ নিজে থেকে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে না। সেক্ষেত্রে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেভাবে তারা এগোবে।

এদিকে বিশেষজ্ঞরাও ঢাকা-লন্ডন-ঢাকা রুট বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট বন্ধের বিষয়ে কোনো কিছু বলছে না।

এদিকে সরকার লন্ডন রুটের ফ্লাইট বন্ধ করার পক্ষে মতামত না দিয়ে সেখান আসা যাত্রীদের সাত দিনের কোয়ারেন্টিন রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব যাত্রীকে কোয়ারেন্টিন রাখা সম্ভব কিনা তা দেখবার বিষয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. বেনজির আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করা উচিত। কিন্ত তা না করে কোয়ারেন্টিনের যে কথা বলা হয়েছে আমাদের অতীত বলছে কোয়ারেন্টিনের অভিজ্ঞতা ভালো নয়।

তবে সরকার ফ্লাইট যে বন্ধ করবে না তাও বলছে না। বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ চলছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত রুটটি খোলা থাকবে। তবে প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে রুট বন্ধ করা হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের অন্যতম জনপ্রিয় ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুট দীর্ঘ ৮ মাস পর চালু হয়েছিল গত ১ নভেম্বর। চালুর এক সপ্তাহের মাথায় বিমান এই রুটের ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দেয় বিমান।

মূলত যাত্রীর অভাবে চালুর আগেই ঢাকা-চেন্নাই রুটের ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বিমানের পক্ষ থেকে।

এদিকে সৌদি ও ওমান সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে বিমান ওই দুটি দেশে এক সপ্তাহের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশদুটির সাথে সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর