বৃষ্টিহীন দিনে সাভারে হাজারও মানুষ পানিবন্দী

, জাতীয়

মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-08-29 17:44:15

শিল্পাঞ্চল সাভারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর। যেখানে গড়ে উঠেছে শত শত পোশাক কারখানা। এখানেই বাস করে হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক। সেই শ্রমিকরাই পানিবন্দী আজ প্রায় দেড় মাস যাবৎ। দেখার যেন নেই কেউ। চরম দুর্ভোগে জীবন যাপন করছেন তরা।

আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার অন্বেষা গলি। এখানকার পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা আটকে দেয় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। এখানেই দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দী শ্রমিকসহ বাড়ির মালিকরা। বাসা বাড়ি ও কয়েকটি পোশাক কারখানার পানি জমে ঘরে উঠেছে। পানি অপসারণের চেষ্টা করলেও স্থানীয় প্রভাবশালী মহল তা করতে দিচ্ছে না।

আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার অন্বেষা গলি

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার অন্বেষা গলিতে গিয়ে দেখা যায়, দূষিত পানিতে ডুবে গেছে অলিগলি। বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেছে এই দূষিত পানি। টয়লেটের পানি উঠছে শোবার ঘরে। এসব কারণে ভাড়াটিয়াসহ বাসার মালিকরা উঠেছে অন্য ভাড়া বাসায়।

পানিবন্দী সোনিয়া বলেন, আমি এস টোয়েন্টি ওয়ান অ্যাপারেলস লিমিটেডে কাজ করি। দীর্ঘদিন ধরে আমার ঘরে দূষিত পানি ঢুকছে। প্রতিদিন সকালে উঠে পানি সেচ দিয়ে রান্না করতে হয়। তারপর খেয়ে কারখানায় যেতে হয়। দুপুরে খাওয়ার জন্যও বাসায় আসতে পারি না। আমরা খুব কষ্টে আছি। বাসা ছেড়েও যেতে পারছি না।

ভাড়াটিয়া মনির বলেন, আমি এখানেই ভাড়া থাকি। একটি দোকান আছে আমার। এক ঘণ্টা পর পর দোকানে পানি ওঠে। সব সময় পানি সেচ দিতে হয়। ক্রেতাও কমে গেছে কয়েক গুণ। দূষিত পানির জন্য কেউ কিছু কিনতে আসে না। পানি সেচ দিতে দিতে হাতে ঘা হয়ে গেছে। এখানকার বাচ্চাদের ডায়রিয়া হচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে চাই।

এক মাস ধরে দূষিত পানিতে সয়লাব

বাড়িওয়ালা বিউটি বেগম বলেন, আমি ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছি। আমার বাসায় বর্তমানে একটি ভাড়াটিয়াও নেই। এই মাসে আমি কিভাবে কিস্তি দেবো ভেবে পাচ্ছি না। আমি বাড়িওয়ালা হয়েও আজ অসহায়। ভাড়াটিয়ার জন্য কিছু করতে পারছি না। আমরা সবাই খুবই দুরাবস্থায় আছি। কে দেখবে আমাদের?

বাড়ির মালিক ইয়াসিন মোল্লা বলেন, আমরা পানি সেচ দেওয়ার জন্য মেশিন বসিয়েছিলাম। কিন্তু কচুমদ্দিন কেচু নামের এক ব্যক্তি তাতে বাধা দেয়। তিনি বলেছেন তার জীবন গেলেও এখানে পানি অপসারণের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে দেবেন না। এতো মানুষ পানিবন্দী কিন্তু তার মন গলে না। একটি ব্যক্তির জন্য প্রায় ১ হাজার শ্রমিকসহ বাড়িওয়ালারা আজ অসহায়।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের মৃধা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করা প্রয়োজন, কিন্তু ভাই সামনে নির্বাচন! কি করুম! আপনার কারখায় গিয়ে বলেন তারা পানি নিষ্কাশনের কি ব্যবস্থা করেছে। আর এই এলাকায় মাদবর বেশি, ওখানে কথায় কোনো কাজ হয় না। ওই এলাকায় আমি অনেক টাকা খরচ করে রাস্তা বানিয়ে দিয়েছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর