রংপুর নগরীর আশরতপুরে প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। একই সঙ্গে তার স্ত্রী মামলার অপর আসামি সাথী বেগমকে দুই কার্যক্রম দিবসে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে মেট্রোপলিটন তাজহাট আমলী আদালতের বিচারক আল মেহেবুব রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর নাজমুল কাদের।
গত বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর আশরতপুর কোর্টপাড়ার একটি বাড়ি থেকে প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বাড়িতে ভাড়া থাকেন রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলী।
নিহত নাজমুল ইসলাম লালমনিরহাটের মুস্তফি অতিপুর এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে। সে রংপুরে আশরতপুর ঈদগাহপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। তার পায়ে সমস্যা থাকায় পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর গ্যারেজ থেকে নেয়া ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন। ওই রিকশাটি গত মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) চুরি হয়ে যায়। এতে রিকশাচালক নাজমুলকে দুই দফায় মারধর করেন হাসান আলী। এলাকাবাসীর সহায়তায় তাজহাট থানা পুলিশ ওই প্রতিবন্ধী রিকশাচালককে উদ্ধার করলেও পরে তাকে ছেড়ে দেন। কনস্টেবল হাসান আলী রাস্তা থেকে রিকশাচালক নাজমুলকে ধরে নিয়ে গিয়ে তার নিজ বাড়িতে বেধড়ক পেটায়।
ঘটনার দিন দুপুরে স্থানীয়দের কাছে নাজমুল আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। বিকেলে কনস্টেবল হাসানের কোর্টপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। ওইদিনই এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে স্ত্রীসহ কনস্টেবল হাসান আলীকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। পরে রাতে নিহত নাজমুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে হাসান ও তার স্ত্রীকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা দুইটার দিকে আসামিদের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফজলে ইলাহী খান শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আজ এ বিষয়ে শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর করে তাজহাট আমলী আদালতের বিচারক আল মেহেবুব। শুনানির সময় আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়নি।