স্বজনদের মাধ্যমে পাচার তিন কিশোরী ফিরলো দেশে

, জাতীয়

আজিজুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর) | 2023-08-19 06:57:47

ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবেশি ও স্বজনদের মাধ্যমে ভারতে পাচারের শিকার তিন কিশোরীকে উদ্ধারের দুই বছর পর ফেরত পাঠয়েছে ভারতীয় পুলিশ। এদিকে ফেরত আসা কিশোরীদের বেনাপোল থেকে জাস্টিস এন্ড কেয়ার নামে একটি এনজিও সংস্থা গ্রহণ করেছে। এনজিওটি পরিবারে কাছে তাদের পৌঁছে দেয়।

শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) বিকেলে ৫টায় তাদেরকে ট্রাভেল পারমিটে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। কিশোরীদের ফিরে পেয়ে স্নেহের মায়ায় জড়িয়ে ধরেন বাবা-মা। 

ফেরত কিশোরীরা হলেন-যশোরের শার্শার মুসলিমা খাতুন (১৭), ভোলার শিল্পী আক্তার পাখি ( ১৮) ও বাগেরহাটের  রাবেয়া খাতুন (১৬)।

কিশোরীদের গ্রহণকারী জাস্টিস এন্ড কেয়ারের যশোর শাখার প্রোগ্রামার অফিসার এ বি এম মুহিত জানান, ভুক্তভোগী কিশোরীদের কাউকে নায়িকা বানানোর আবার কাউকে ভাল কাজ আবার কাউকে বেড়ানোর কথা বলে আত্মীয়রা ভারতে নেয়। পরে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঝুঁকিমূলক কাজে ব্যবহার করে।  পুলিশ খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি এনজিও সংস্থা তাদেরকে ছাড়িয়ে নেয়। মুসলিমা খাতুনকে দুই বছর, রাবেয়া খাতুনকে দুই মাস ও শিল্পী আক্তার পাখিকে এক বছর নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। এরপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালির মাধ্যমে ট্রাভেল পারমিট নিয়ে আজ বিকেলে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠায় ভারত সরকার। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে জাস্টিস এন্ড কেয়ার।

পাচারের শিকার কিশোরী রায়েবা জানান, ছোট বেলা থেকে তার শখ ছিল মডেল হবে। কিন্তু বাবা-মা রাজি না থাকায় সম্ভব হচ্ছিল না। এ সময় প্রতিবেশি চাচি তাকে মডেল বানানোর আশ্বাস দিয়ে ভারতে নিয়ে জোর করে খারাপ কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। পরে সুযোগ পেয়ে পুলিশকে জানালে তিনি উদ্ধার হন।

এদিকে দিনমজুর পরিবারে প্রতিবন্ধী কিশোরী মুসলিমাকে বাবা-মার অজান্তে প্রতিবেশি স্বজনরা ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। মা খবর জানতে পেরে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। পরে সিআইডির প্রচেষ্টায় এক বছর পর পাচারকারীদের খপ্পর থেকে উদ্ধার হয় মুসলিমা।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ফেরত আসা তিন নারীকে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ ট্রাভেল পারমিটে মাধ্যমে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। কাগজ পত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদেরকে জাস্টিস এন্ড কেয়ার নামে একটি এনজিও সংস্থা গ্রহণ করেছে। পরবর্তীতে এনজিও সংস্থা তাদের পরিবারে কাছে হস্তান্তর করবে বলেও তিনি জানান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর