১৯১ ইটভাটার মধ্যে ৫০টি বৈধ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া | 2023-08-28 01:59:56

কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় মোট ইটভাটার সংখ্যা ১৯১টি। এর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে অনুমোদন নিয়ে মাত্র ৫০টি ইট ভাটা চলমান রয়েছে। অবশিষ্ট ১৪১ভাটার মধ্যে শতাধিক ইটভাটা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলায় ১৯১টি ইট ভাটা রয়েছে। এর মধ্যে জিগজ্যাক ইটভাটা ৬২টি, ড্রাম চিমনি ইটভাটা ৩০টি ও ১২০ ফুট ফিক্সড চিমনি ইটভাটা ৯৯টি।

রিটের সময়মতো জবাব না দেয়া ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে বন্ধ আছে অনুমোদন। এসব অধিকাংশ ইটভাটায় কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অধিকাংশ ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় মোট ইটভাটার সংখ্যা ১৯১টি

একটি সূত্রে জানা যায়, কৃষি জমি ব্যবহার না করে মজা পুকুর, খাল, বিল, খাড়ি, দীঘি, নদী, হাওড়, বাওড়, চরাঞ্চল ও পতিত জায়গা হতে মাটি সংগ্রহ করার কথা বলা আছে। অথচ ২০১৩ এবং ২০১৯ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ ও সংশোধন আইনে ড্রাম চিমনি ও ফিক্সড চিমনির ইটভাটা বন্ধ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও লোকালয় হতে ১ কি. মি. দূরে ভাটা স্থাপনের বিধান রয়েছে। এই আইনে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আইন অমান্য করে যারা অবৈধ ভাটা নির্মাণ এবং কাঠ পোড়াবেন তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র ও জেলা প্রশাসন হতে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হলেও কুষ্টিয়ায় এসব নিয়মের ধার ধারে না কেউ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৩৬ টি, কুমারখালিতে ১৮টি, মিরপুরে ২৫টি, ভেড়ামারায় ৩০টি ও দৌলতপুরে ২৬টি ড্রাম চিমনি ও ১২০ ফুট ফিক্সড চিমনি ইট ভাটা রয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশ ভাটা স্থাপন নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদন না পাওয়ায় হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছে।

মিরপুর উপজেলার মশান এলাকার কয়েকটি ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায় ইটভাটার মধ্যেই অস্থায়ী কাঠ চেরাই করা মেশিন। সেখানে মোটা গাছের কাঠ চেরাই করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

কয়েকটি জিগজ্যাক ভাটার অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। এরা সবাই মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ইট ভাটা স্থাপনের নীতিমালা না মানায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিবেশ।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাসিবুর শাহীদ বলেছেন, ইটভাটার চুল্লি নিচু হলে মানুষ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ধোঁয়ায় গাছ, ফলমূল ও ফসল নষ্ট হয়ে যায়। কয়লা থেকে ব্যাপক ভাবে কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হওয়ায় মানুষ সর্দি, কাশি, শ্বাস কষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতাউর রহমান বলেন, কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে অনুমোদিত ইটভাটার সংখ্য মাত্র ৫০টি। আর ১৪১টি ইটভাটার মধ্যে অনেকেই হাইকোটে রিট করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।অবৈধ এসব ইটভাটায় আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি।

গেলো বছরে বিভিন্ন ইটভাটায় অনিয়মের কারণে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর