জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে

, জাতীয়

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 06:27:02

দেশের জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নের সাথে সে দেশের প্রচলিত আইন ও নীতিগুলোর সম্পর্ক নিবিড়। স্বার্থনেষী কিছু গোষ্ঠী এসব নীতিকে তাদের স্বার্থে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে থাকে। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক নিয়ন্ত্রণকে আরো গুরুত্ব প্রদান এবং রাষ্ট্রে প্রচলিত অন্যান্য আইন থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এ ধরনের বিধানগুলো যুগোপযোগী করা জরুরি।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কৈর্বত্য সভা কক্ষে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত “তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আইন ও নীতি সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ” অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, দি ইউনিয়ন এর কারিগরী পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রোগ্রাম অফিসার ডাঃ ফরহাদ রেজা, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ, সিটিএফকে এর সিনিয়র পলিসি এডভাইজার আতিউর রহমান মাসুদ, ডাস এর উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল।

তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আইন ও নীতি সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচী ব্যবস্থাপক, সৈয়দা অনন্যা রহমান।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য হলেও, রাষ্ট্রপতির (পারিশ্রমিক ও অধিকার) আইন, ১৯৭৫ আইনে রাষ্ট্রপতির বাড়ির সদস্য বা তার অতিথি কর্তৃক গৃহিত হলে কোন দেশী তামাকের উপর কোন আবগারি শুল্ক আদায় করা হবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় সিগারেটের মতো ক্ষতিকর ও স্বাস্থ্যহানীকর দ্রব্য শুল্কবিহীন প্রদানের বিধান বাতিল করা জরুরি।

গবেষণায় বর্তমানে বিদ্যমান ১১টি আইন ৭টি বিধি ও ২টি আদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন বিধান যুক্ত রয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়। সরাসরি আইন নীতি ছাড়াও এমন কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো তামাককে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে উৎসাহিত করছে। যার মধ্যে পাঠ্যপুস্তকে তামাককে অর্থকরী ফসল এবং সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে তামাকের স্বপক্ষের তথ্য উপস্থাপন উল্লেখযোগ্য ।

সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি রাষ্ট্রের আইন ও নীতি সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

আবু নাসের খান বলেন, রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশি বিনিয়োগ অবশ্যই কাম্য। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগের নামে যেন তামাকের স্বাস্থ্যহানীকর পণ্যে উৎসাহ প্রদান না করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কিছু আইনে প্রত্যক্ষভাবে সমস্যা তৈরি না করলেও পরোক্ষভাবে তামাক কোম্পানীকে সুযোগ দেবার বিষয়টি রয়ে গেছে।

এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ১৯৯০ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইন প্রণয়নের মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। কিন্তু তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপের কারণে এটি সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এ ঘটনার ১৫ বছর পর বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সকল তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এ দীর্ঘ সময়ের মাঝে হাজার হাজার তরুণকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ধূমপানে আকৃষ্ট করার সুযোগ পেয়েছে কোম্পানিগুলো। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক কোম্পানিগুলোর এ ধরনের সুযোগ বন্ধ করা জরুরি।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর