অপহৃত ব্যবসায়ী মিহির রায় উদ্ধার, গ্রেফতার ২

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 05:34:44

রাজধানীর উত্তরা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মিহির রায়কে উদ্ধারসহ অপহরণকারী দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন–মো. মিরাজ (৩৫) ও বৃষ্টি (২১)।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এর আগে সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে দক্ষিণখান থানার চেয়ারম্যান পাড়ার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে উত্তরা জোনাল টিম।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহৃত একটি ছুরি, ৫৭টি ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি প্লাস উদ্ধার করা হয়। সেই সাথে ভিকটিমের স্ত্রীর কাছ থেকে বিকাশে নেয়া নগদ ৪৯ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, মিহির রায়ের উত্তরা ৯নং সেক্টরে 'ফুড স্টোরি' নামে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান আছে। ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টা ৩০ মিনিটে একজন লোক দোকানে খাওয়া শেষে ভিকটিমের সাথে আলোচনা করে। বলে তার দোকানের খাবার ভালো লেগেছে। তার এক বড় ভাইয়ের প্রোগ্রামে ৮০ প্যাকেট খাবার অর্ডার দেবেন বলে মিহিরকে সাথে করে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের স্ত্রী তার ব্যবহৃত নাম্বারে ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পায়। ১৪ জানুয়ারি ভিকটিমের নাম্বার থেকে তার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন আসে এবং কোন কথা না বলে ফোন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর অন্য একটি নাম্বার থেকে ভিকটিমের স্ত্রীর নাম্বারে ফোন আসে এবং মিহির বলে যে, এরা আমার হাত, পা ও চোখ বেঁধে রেখেছে। ২০ লক্ষ টাকা দিলে তারা আমাকে ছেড়ে দেবে। ভিকটিমের স্ত্রী বিভিন্ন সময়ে অপহরণকারীদের দেয়া নাম্বারে ২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা বিকাশ করে। অবশিষ্ট টাকা না দিলে তার স্বামী মিহিরকে ক্ষতির হুমকিও দেয় অপহরণকারীরা।

এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।

ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, মামলার পর অপহৃত ব্যবসায়ী মিহির রায়কে উদ্ধারের জন্য রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালায় উত্তরা জোনাল টিম। অভিযানের সময় গোয়েন্দা টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অপহরণ চক্রটি ভিকটিমকে দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়ার হেজুর উদ্দিন রোডের একটি বাড়িতে আটকে রেখেছে। এমন সংবাদ পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। বাড়িটির ৩য় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি অপরহরণকারী চক্র। তারা বিভিন্ন সময় অপহরণের সাথে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এই চক্রটি বেশ কিছুদিন ধরে অভিনব কায়দায় অপহরণ করতো। অপহরণের পর তারা হাত, পা, মুখ ও কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে গোপন আস্তানায় নিয়ে যেতো। এরপর নানাভাবে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালানো হতো অপহৃত ব্যক্তির উপর। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আদায় করা হতো বিপুল পরিমাণ টাকা।

এছাড়াও, অপহরণকারীরা অপহরণের পর ভিকটিমের অশ্লীল ছবি তুলে রাখে, যাতে ভিকটিম মুখ খুলতে না পারে। যদি এ বিষয়ে পুলিশ অথবা অন্য কারো কাছে অভিযোগ করে তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর