৪৯ বছরের জঞ্জাল উচ্ছেদ করলেন মেয়র আতিক

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 17:23:08

স্বাধীনতার পর থেকে অবৈধভাবে দখল করে একটি সুবিধাবাদী বিশেষ সুবিধা নিচ্ছিল মিরপুর-১১ সেকশনের ৪ নং সড়কের দুই পাশে। সেখানে বড় স্থাপনা, দোকান, স্কুলসহ বহু স্থাপনা দিয়ে দখল করে রেখেছিল ওই সুবিধাবাদী মহল। এবার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। প্রচণ্ড প্রতিরোধের মধ্যে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দখলদারদের স্থাপনা গুড়িয়ে দিলেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে ৪৯ বছর যাবত এটি দখলকৃত রাস্তা ছিল। অনেকবার চেষ্টা করেও এটাকে সফল করতে পারিনি আমরা। এবার এই এলাকার জনগণ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠনের সহায়তায় সেটা সম্ভব হয়েছে।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সকালে মিরপুর-১১ এর এভিনিউ-৪ (পল্লবীতে) দ্বিতীয় দিনের মত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নামে ডিএনসিসি। উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, যে রাস্তাটা আমরা ক্লিয়ার (দখলমুক্ত) করলাম এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোড। মিরপুর থেকে এয়ারপোর্ট যাওয়ার জন্য শুধু কালশী রোড ছিল, এখন কালশী রোডরে সাথে সাথে আর একটা পেরালাল রোড হতে চলছে এই রোডের চওড়া হবে প্রায় ৭৫ ফিট সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন হবে ৬০ ফিট। মিরপুরে এরকম একটি রাস্তা বের করার জন্য আমাকে অনেকেই বলেছেন মেয়ের সাহেব আপনি কি যে কাজ করে দিয়েছেন আপনি জানেন না, কিন্তু আমরা যে কত বড় উপকৃত হব।

উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে বলেন, গতকাল প্রায় ৮০ শতাংশ উচ্ছেদ করেছি,  ১৫ শতাংশ বাকি আছে। বিভিন্ন বাসাবাড়িতে এলাইনমেন্ট করার জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে রোড মার্কিং করে দেবে এবং সেই মার্কিং করেই আমরা কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। এটি প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এবং প্রস্থ হবে ৬৫ ফুট। এই রাস্তার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি। এই বরাদ্দকৃত টাকার মাধ্যমে পুরো কাজটি করব।

তিনি বলেন, এছাড়াও মিরপুর এলাকায় বেশ কিছু কিছু জায়গায় এখনও দখলে আছে। এই উচ্ছেদ আজকেও চলবে এবং আগামীকালও অব্যাহত থাকবে। এই ঢাকা শহরে যখন যেটাই ধরি সেটাই অবৈধ, যে মার্কেট করতে চাই, সেটা অবৈধ, যেখানে খাল উচ্ছেদ করতে যাই খালের দুই পার অবৈধ। অবৈধ হতে হতে বৈধরা সংকুচিত হয়ে গেছি। অবৈধদের কারণে বৈধরা আজকে সংকুচিত হয়ে গেছে। সময় এসেছে অবৈধদের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তিশালী হতে হবে। এবং কোনোভাবেই কোনো অবৈধ যেন ঠাঁই না পায়।

মেয়র বলেন, অবৈধ দুইভাবে হচ্ছে। একটা হল স্থায়ী, যেটা উচ্ছেদ করা হচ্ছে এগুলো কিন্তু স্থায়ী ছিল, আরেকটি হলো অস্থায়ী। আমি এখন গুরুত্ব দিচ্ছি স্থায়ীভাবে যারা দোকানপাট স্কুল করে বিভিন্ন দলের অফিস করেছে, তাদের উচ্ছেদ হতেই হবে। পর্যায়ক্রমে সবকিছুই হবে। আমি বারবার বলছি যারা স্থায়ীভাবে দখল করে আছেন চলে যান। এখানে যে জায়গাটি ছিল বিশেষ করে ভাসানীর মোড় এটি একটি মাদকের আখড়া ছিল, সন্ত্রাসের আখড়া ছিল, সেই মাদকের আখড়া সন্ত্রাসের আখড়া জনগণের সহায়তায় আমরা সেটা ভেঙে দিয়েছি উচ্ছেদ করে দিয়েছি। আমাদের বিশ্বাস পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের যত অবৈধ দখলকৃত যারাই আছে তাদের জন্য বার্তা আপনারা নিজেরা সরে যান। অবৈধ দখল কারীদের জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে আমি কোন নোটিশ দিব না। আমি স্পটে যাব এলাকার মানুষের সহায়তায় অবৈধ দখল ভেঙে দেবো। কেননা উনারা নিজেরাই জানে যে এটা অবৈধ, এজন্য অবৈধরা পিলারের পরে আরেকটি করে ছোট পিলার দিয়ে বর্ধিত করে রাখেন। কাজেই কোন নোটিশ দিয়ে না স্পটে গিয়ে উচ্ছেদ করা হবে।

মেয়র বলেন, অবৈধদের পাল্লা বেশি হয়ে যাচ্ছিল এটি বাস্তবতা। আসুন সকলের সহযোগিতায় বৈধদের পাল্লা বেশি করি। আজকে যারা যারা এই ভবনগুলো করেছে কাউকে-না-কাউকে ম্যানেজ করে এগুলো করেছে। যে যার মতো করে ম্যানেজ করে ফেলেছে। অবশ্যই আমাদের লোকও জড়িত থাকতে পারে, রাজউকের লোকও হতে পারে, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের লোকও হতে পারে। এই যে বড় বড় ভবনগুলো এলাকার প্রভাবশালীর হতে পারে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় হতে পারে, এটাই বাস্তবতা। কথা হচ্ছে যেই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

রাস্তার মধ্যে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি সড়াতে প্রয়োজনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানিয়ে মেয়র বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটির বিষয়ে ডেস্ক চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমরা চিঠিও দিয়েছি যে আমরা রাস্তা বড় করছি কিন্তু বৈদ্যুতিক খুটি সরানো হচ্ছে না। কাজেই আমরা রাস্তা যেভাবে চওড়া করে দিব অনতিবিলম্বে বৈদ্যুতিক খুঁটি গুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে হবে। রাস্তার সুবিধা যেন জনগণ পায় বৈদ্যুতিক খুঁটির জন্য যেন কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা না আসে এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব। শুধু বৈদ্যুতিক খুঁটি না অন্যান্য সংস্থার যদি কোন লাইন থাকে সেগুলো অপারেশন করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর