ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি প্রতিহত করার দাবি ফিরোজ রশীদের

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-29 15:31:43

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও নাস্তিক নির্মূল কমিটি প্রতিহত করার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেছেন, আমাদের কিছু সংগঠন আছে অনেকে ভুঁইফোড়। একটি সংগঠন আছে নাস্তিক নির্মূল কমিটি আর একটি সংগঠন হচ্ছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এই নির্মূল করার ক্ষমতা এদের কে দিয়েছে। তুমি কে লোককে নির্মূল করার। আমাদের দেশে কোর্ট-কাচারী আছে না? অনেক বিচার করেছে এই সরকার। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে ঘাতকদের বিচার হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে তুমি কেন নির্মূল করতে চাও, তোমরা নির্মূল করার কারা। তোমরা নিজেরা পুলিশ পাহারায় থেকে ধান্দাবাজি করছো। এদের প্রতিহত করা দরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলবো এই সমস্ত সংগঠনগুলো বন্ধ করুন যাতে কেউ নির্মূল করতে না পারে। কিসের নির্মূল কমিটি। এটা সমাজের একটা কালচার হয়ে গেছে।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, উন্নয়নের প্রথম ভিত রচনা করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু মনে করতেন পরাধীন দেশে কখনো উন্নয়ন করা সম্ভব না। তাই তিনি সর্বপ্রথম বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। এরশাদ সাহেবের আমলে গ্রাম বাংলায় অভুতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে সর্বত্র। দুঃখ লাগে সরকারের সর্বক্ষেত্রে সাফল্য কৃতিত্বের পেছনে জাতীয় পার্টির একটা ভূমিকা আছে কিন্তু আওয়ামী লীগের কোন নেতা কোনদিন একবারও নাম উচ্চারণ করে না। আমরা তো হাজার বলি এই সরকারের এই কাজ হয়েছে। আমাদের তো কার্পণ্য নেই তাদের কেন এতো কার্পণ্য রাজনীতিতে।

তিনি বলেন, ২০১৪ সাল নির্বাচনের আগে জননেত্রী বলেছিল যে ধ্বংসযোগ্য চলছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনে যদি জাতীয় পার্টি না আসত নির্বাচন হত না, নির্বাচন না হলে সরকার হতো না। সরকার না হলে উন্নয়ন হতো না সংবিধান থাকত না গণতন্ত্র থাকত না। সব তছনছ হয়ে যেত ধ্বংস হয়ে যেত। জাতীয় পার্টি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই নির্বাচনে এসেছিল। জাতীয় পার্টি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে উন্নয়নে বিশ্বাস করে।

নিজ দলের এমপিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই সংসদ অত্যন্ত প্রাণবন্ত সংসদ। জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করেছে। সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসেছি এটা হচ্ছে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমাদের কারো কারো বক্তব্যে বোঝা যায় না আমরা কোন দলের সংসদ সদস্য। কোন কোন সংসদ সদস্য একবারও জাতীয় পার্টির নাম উচ্চারণ করে নাই। আমাদের নেতা এইচএম এরশাদ সাহেবের নাম উচ্চারণ করে নাই। অথচ তারা আমাদের দলের সংসদ সদস্য। আমাদের মনোনয়ন নিয়ে সংসদে আছেন।

স্কুল-কলেজ খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনায় গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই সব স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিলেন। যদি বন্ধ না করত একটা বিপর্যয়ের মুখে আমাদের পড়তে হত। ফলে একটা ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বেঁচে গেছি। শিশুরা আক্রান্ত হলে গোটা পরিবার আক্রান্ত হত। আমার এলাকায় সব থেকে বেশি স্কুল কলেজ। আড়াই মাসের একটি বাচ্চা দুইবার করোনায় আক্রান্ত হল। মার্চ মাস পর্যন্ত দেখেন। করোনা কিছুটা স্থমিত হয়ে গেছে তার মানে এই না করোনা শেষ হয়ে গেছে। মার্চ মাসের দিকে গরম আসবে তখন স্কুল কলেজ খুলে দিলে ভালো হবে। এই ‍মুহূর্তে কারো কথায় স্কুল খুলবেন না।

অর্থনৈতিক খাতে লুটপাট হচ্ছে তুলে ধরে তিনি বলেন, বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সেক্টরগুলো একদম দুর্বল এবং নড়বড়ে এবং দুর্নীতি নির্ভর করেছে। ব্যাংকিং সেক্টর হাজার হাজার কোটি নিয়ে মানুষ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। এই ব্যাংকের পরিচালক ওই ব্যাংক থেকে নেয় ওই ব্যাংকের পরিচালক এই ব্যাংক থেকে নেয়। যখন একটি দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকে আত্মীয় স্বজনের অভাব হয় না। শালা সমন্ধি তার শালা তার শশুর বাড়ি এরা সবাই ঝাপিয়ে পড়ে ব্যাংক থেকে লোন নেবার জন্য। লোন পেয়েও তো যাচ্ছে। এই টাকা কোথায় যায় মনিটরিং হচ্ছে না।

পদ্মা ব্রিজ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, পদ্মা ব্রিজের নিচ দিয়ে আসলাম। ওখানে আসার সাথে সাথে আমাদের ফেরিটা একটু স্লো করে দেয়।সেখানে বড় একটা সাইনবোর্ড আছে। ঘাটে ওঠার পরেই আশা করে থাকি পদ্মা ব্রিজের কাছে কখন যাব। এখন পর্যন্ত ওপরে ওঠা যায় না। অন্তত ৪০০-৫০০ শ্রমিক কাজ করছে উপরে। ওঠা যায় না। গাড়ি উঠেছে উপরে আমরা নিচ থেকে তাকিয়ে দেখলাম। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখলাম এটা কি সম্ভব? আমাদের দেশের টাকায়। যারা একদিন বলেছিল যে পদ্মা ব্রিজের টাকা চুরি হচ্ছে বিশ্বব্যাংক বলছে দেবে না। কোথায় কে কার টাকা চুরি করছে ওদের এখন ডেকে এনে জিজ্ঞেস করা উচিত পদ্মা ব্রিজে উঠাইয়া। ওপরে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দেখানো উচিত যে কে টাকা চুরি করেছে, কোন জবাব দিতে হবে, না হলে এখান থেকে নিচে ফেলে দিতে হবে। ৩ কোটি মানুষের জন্য কি হচ্ছে। সবাই বলছে অবস্থা ভালো হবে। প্রত্যেক লোক আশা করছি পদ্মা ব্রিজ হলে জীবন মান উন্নত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর