সচিবালয়ের চারপাশসহ সারাদেশের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী নিধন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই।
মন্ত্রী এসময় শব্দদূষণ রোধে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশনা প্রদান করেন।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-র বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য ভার্চুয়ালী আয়োজিত মাসিক সভায় সরকারী বাসভবন হতে অনলাইনে যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ মন্ত্রী এসব নির্দেশনা প্রদান করেন।
শব্দদূষণ রোধ বিষয়ে " শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক" প্রকল্পের পরিচালক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সচিবালয়ের চারপাশ ও আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় নীরব এলাকা বাস্তবায়ন করতে অতি শীঘ্রই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাতি নিধন রোধ বিষয়ে ' বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও আবাসস্থল উন্নয়ন প্রকল্পে'র পরিচালক মিহির কুমার দো বলেন, চলমান প্রকল্পে হাতি নিধন রোধ বিষয়ক কোনো কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত না থাকলেও বন বিভাগের নিয়মিত কার্যক্রমের আওতায় হাতি নিধন রোধে সচেতনতা মূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যাপক ভিত্তিতে কাজ করার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে, যা অনুমোদিত হলে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়ক হবে।
পরিবেশ মন্ত্রীর এক জিজ্ঞাসার জবাবে 'ইন্টিগ্রেটিং কমিউনিটি বেইজড এফরেস্ট্রেশন এন্ড রিফরেস্ট্রেশন' প্রকল্পের পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মাহমুদ হাসান জানান, উপকূলের সর্বাধিক বিপন্ন ৫টি জেলার ৮টি উপজেলায় ১০৫০০ পরিবারের প্রায় ৬০ হাজার মানুষের জীবিকায়নে জলবায়ু সহিষ্ণু প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হয়েছে। তিনি জানান, এ প্রকল্পের আওতায় বন বিভাগের মাধ্যমে ৩৬০ টি পুকুরে থ্রি এফ মডেল (ফরেস্ট, ফিস, ফ্রুট) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৩৪০ পরিবারে জলবায়ু সহনশীল কৃষিকাজ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৩৪০ পরিবারে জলবায়ু সহনশীল মৎস্য প্রদর্শনী খামার স্থাপন এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে জীবন জীবিকার জন্য ২৫০০ টি খানায় হাস, মুরগী, টার্কি পালনের ব্যবস্থা সহ একটি করে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন)মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোঃ মিজানুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) মোঃ মনিরুজ্জামান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ, কে, এম রফিক আহাম্মদ, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরীসহ দফতর প্রধানগণ ও বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকরা আলোচনায় অংশ নেন। সভায় সকলে চলমান প্রকল্পগুলো যথাসময়ে যথানিয়মে সম্পন্ন করার বিষয়ে আলোচনা করেন।