রাজনীতিকে যাদুঘরে পাঠাতে হবে: সালমা ইসলাম

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 06:33:35

রাজনীতিবিদদের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস নেই বলে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সালমা ইসলাম বলেছেন, সাধারণ মানুষ এখন আর আমাদের নিয়ে ভাবে না। বেশিরভাগ মানুষ রাজনীতিবিদদের বিশ্বাসই করে না। আমি মনে করি এটি আমাদের জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ। সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা যদি আমাদের বিশ্বাস না করে তাহলে এই রাজনীতি কাদের জন্য? রাজনীতির অন্ধগলি থেকে যতদিন মুক্ত হতে না পারব ততদিন গণতন্ত্র ওই অর্থে সুসংহত হবে না।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সালমা ইসলাম বলেন, ইতিহাসের পাতায় বহু বড় বড় রাজনীতিবিদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। যাদের আদর্শ ধারণ করে অনেকেই রাজনীতিতে আসেন এবং যে সব নেতাকে একবার দেখার জন্য মানুষ ছুটে আসত। তাদের বক্তব্য শুনতে মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকত। সেই সব নেতাদের উত্তরসূরি হিসেবে সেই মানের নেতা কি আছে? থাকলে তার সংখ্যা কত হবে?

তিনি বলেন, কিছু কর্মকাণ্ড দেখে আমি লজ্জিত হই, বিব্রত বোধও করি। একসময় ছিল রাজনীতি মানেই আত্মত্যাগ। কোথায় সেই রাজনীতি? এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে প্রকৃত ত্যাগী এবং নীতিবান রাজনীতিবিদদের মূল্যায়নই হয় না বরং সর্বত্র হাইব্রিডদের জয়জয়কার। শটকাট পথে রাতারাতি ধনী হতে অনেকে রাজনীতিতে নাম লেখান। রাজনীতি নাকি ধনী হওয়ার বড় একটি উপায়। একটি দলে যার নিজের এবং পরিবারের অতীত কোন অবদান নেই তিনিও বিশেষ সংযোগে হঠাৎ বড় নেতা হয়ে যাচ্ছেন। তিনিও পদও পাচ্ছেন। এমনকি কেউ কেউ সংসদেও ঢুকে যাচ্ছেন। কি দুর্ভাগ্য জাতির। তাই সাধারণ মানুষ মনে করে রাজনীতি এখন একটা ব্যবসা। বাস্তব মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ব্যবসা করার চেয়ে এখানে ব্যবসা করে দ্রুত ধনী হওয়াও যায়। এইরকম ধারণা সমাজে তীব্রভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে জনগণের বদ্ধমূল নেতিবাচক ধারণা দূর করতেই হবে। এটি সময়ের দাবি। আমরা যারা আছি তাদের অনেকেরই বয়স ৬০ এর বেশি । কিন্তু আমরা কি রেখে যাচ্ছি। পরবর্তী প্রজন্ম কি আমাদের নিয়ে গর্ববোধ করতে পারবে? রাজনীতির অন্ধগলি থেকে যতদিন মুক্ত হতে না পারব ততদিন গণতন্ত্র ওই অর্থে সুসংহত হবে না। দেশে সরকারও থাকবে উন্নয়নও হবে ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত বেঁচে থাকার তাগিদে কাজ করে যাবে। প্রবাসী ভাই বোনরা রেমিটেন্স পাঠাতে থাকবে। অথচ রাজনীতিকে এক সময় যাদুঘরে পাঠাতে হবে। জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতি চূড়ান্ত বিচারে আমাদের কখনো ভালো কিছু দিতে পারবে না। এতে জনগণের মধ্যে যে আস্থাহীনতা বাড়ছে তা দিনে দিনে আরও বাড়বে বিনিময়ে আমাদের শুধু অন্ধকারের সিঁড়ি পারি দিতে হবে।

একসময় টার্নেলের শেষ প্রান্তেও আলোর দেখা পাওয়া যাবে না। ফলে রাজনীতিবিদরা কখনো বিপদে পড়লে সাধারণ মানুষ পাশেও থাকবে না। কর্মচারী শাসকের ভূমিকায় চলে আসবে। সময় এখনো চলে যায়নি। সবাই মিলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ ও কিছু ব্যবসায়ী মহলও দেশে সম্পদ রাখলে নাকি ভয় পায়। হালালভাবে উপার্জন করলে ভয় কিসের?

এ সম্পর্কিত আরও খবর