রমেক হাসপাতালে বেহাল শৌচাগারে নাকাল রোগী-স্বজনরা

, জাতীয়

আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-22 17:32:39

শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। মেঝেতে পানি ও ময়লা জমে পিচ্ছিল হয়ে আছে। কোনোটি আবার আবর্জনা দিয়েই ভর্তি রয়েছে। দেয়াল স্যাঁতসেঁতে। আবর্জনার দুর্গন্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। রোগীরা নাক চেপে ধরেই এগুলো ব্যবহার করছে।

এমনই অবস্থা রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত গোসলখানা ও শৌচাগারগুলোর। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে অধিকাংশ শৌচাগার বর্তমানে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে হাসপাতালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শৌচাগার ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের অধিকাংশ গোসলখানা ও শৌচাগারের বেহাল অবস্থা। মেঝেগুলো নোংরা-অপরিষ্কার। পানি পড়তে পড়তে সেগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। রোগী ও স্বজনেরা পা টিপে টিপে সাবধানে চলাফেরা করছেন। শৌচাগারের প্রবেশ মুখেই খাবারের উচ্ছিষ্ট ও মলমূত্র পড়ে রয়েছে। বেশকিছু শোচাগারের দরজার নিচের অংশ ভাঙা রয়েছে।

হাসপাতালের অধিকাংশ গোসলখানা ও শৌচাগারের বেহাল অবস্থা

অনেকটা বাধ্য হয়েই রোগী ও স্বজনরা এগুলো ব্যবহার করছেন। শুধু ভিতরে নয়, হাসপাতালের বাইরেও যত্রতত্র আবর্জনা জমে আছে। পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া একজন রোগীর স্বজন মতিয়ার রহমান বলেন, শৌচাগারগুলোর এমন অবস্থা রোগীকে ভিতরে পাঠিয়ে বাইরে পাহারা দিতে হয়। রোগী কখন পড়ে গিয়ে চিৎকার করে ডাকে। শুধু আমি না, প্রায় রোগী শৌচাগারে গেলে দরজায় স্বজনদের পাহারা দিতে হয়।

হৃদরোগ ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শৌচাগারগুলোর এমন দুরবস্থা সেখানে যাওয়াই মুশকিল। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকটা বাধ্য হয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়।

মেডিসিন ওয়ার্ডে একজন রোগীকে দুই স্বজন সাবধানে শৌচাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। ওই রোগীর স্বজন হাবিবুর রহমান বলেন, টয়লেটের যে অবস্থা তাই রোগীকে সাবধানে নিয়ে যাচ্ছি। সবাই ভয়ে ভয়ে টয়লেটে যায়, যাতে পিছলে পড়ে না যায়।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনের অভিযোগ, ওয়ার্ডগুলোর শৌচাগার পরিষ্কার রাখা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু তাদের এদিকে তেমন নজর নেই। অপরদিকে প্রতিদিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়াসহ যত্রতত্র আবর্জনা ফেলায় গোসলখানা ও শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগের আট জেলার মানুষ রমেক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে আসেন। এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে ১০টি ব্লকে বিভক্ত এবং প্রতিটি ব্লকে ওয়ার্ড আছে চারটি করে। এসব ওয়ার্ডে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন শয্যা সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। রোগীদের স্বজন মিলে হাসপাতালে প্রতিদিন লোকের সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ থেকে সাত হাজার।

রমেক হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রোস্তম আলী বলেন, রোগী ও স্বজনদের চাপে এগুলো পরিষ্কার রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। বর্তমানে ছয়শ বেডের অবকাঠামো ও লোকবল দিয়ে এক হাজার বেডের সেবা দিতে হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর