স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ হবে বাংলাদেশের জন্য গৌরবের: অর্থমন্ত্রী

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-21 12:24:03

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ হবে বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবের বিষয়। এটি হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার সফল বাস্তবায়ন। একই সঙ্গে এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছে তারই স্বীকৃতি।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ‘Effective Partnership with the Private Sector for Sustainable Graduation’  শীর্ষক একটি অনলাইন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ই আর ডি) কর্মশালাটির আয়োজন করে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।

কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) এবং স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ সংক্রান্ত জাতিয় টাস্ক ফোর্স-এর সভাপতি মিজ জুয়েনা আজিজ।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পৃথিবীতে যখনই অর্থনৈতিক সংকট এসছে, সব সংকটের সময়ই বাংলাদেশ খুব দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছে। একইভাবে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ পরবর্তী সময়ের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। একই সাথে স্বল্পোন্নত দেশ হতে খাপ খাইয়ে নেবার জন্য দেশের বেসরকারি খাতের গবেষণা ও উন্নয়নের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর আরও গুরত্ব দিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছি। Artificial intelligence, ICT, block chain ইত্যাদি ব্যবহার করে আমাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে, না হলে অন্যদেশের তুলনায় আমরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব। এ বিষয়ে প্রাইভেট সেক্টরের দক্ষতা উন্নয়নে Support to Sustainable Graduation প্রকল্প থেকে কিভাবে প্রাইভেট সেক্টরকে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

কর্মশালায় বক্তব্য প্রদানকালে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তাসমূহ হ্রাস পাওয়া সাপেক্ষে বাংলাদেশকে এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। উত্তরণ পরবর্তী সময়ের জন্য প্রস্তুতির লক্ষ্যে বাংলাদেশকে এখন থেকেই বিভিন্ন দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য ছুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা শুরু করতে হবে।

ই আর ডি সচিব মিজ ফাতিমা ইয়াসমিন তাঁর উপস্থাপনায় উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য কি কি সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হবে তা উল্লেখ করেন। একই সাথে সরকার বেসরকারি খাতের সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতা ও আলাপআলোচনার মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের লক্ষ্যে কি কি প্রস্তুতি গ্রহণ করছে তাই তিনি তাঁর উপস্থাপনায় তুলে ধরেন।

এফবিসিসিআই- এর সভাপতি জনাব শেখ ফজলে ফাহিম আসন্ন সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের জন্য প্রণীতব্য ক্রান্তিকালীন কৌশল প্রনয়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করেন।

উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ গত ২০১৮ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত সি ডি পি- এর সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় প্রথমবারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হয়েছিল। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দু’টি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করে।

উত্তরণের শর্ত পূরণে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাসি ডি পি এর সর্বশেষ তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী আসন্ন ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ পুনরায় উত্তরণের মানদণ্ডসমূহ পূরণে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছরের প্রস্তুতিমূলক সময় শেষে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। তবে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য প্রযোজ্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তাসমূহ বিশেষ করে বৈশ্বিক বাজারে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা এবং TRIPS সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধাসমূহ ক্রমশ প্রত্যাহার হওয়া সাপেক্ষে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্ন গতিপ্রকৃতির সম্মুখীন হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সাথে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রভাবসমূহ সম্পর্কে আলোচনা ও পর্যালোচনা করবার জন্য উক্ত কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়। 

কর্মশালায় উত্তরণের সম্ভাব্য প্রভাব এবং তাঁর মাত্রা ও প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। একই সাথে উক্ত উত্তরণের সম্ভাব্য প্রভাব কাটিয়ে উঠার জন্য গৃহীতব্য পদক্ষেপসমূহ সম্পর্কেও কর্মশালায় আলোকপাত করা হয়। আসন্ন প্রস্তুতিমূলক সময়ে বাংলাদেশকে যে Transition Strategy বা ক্রন্তিকালীন কৌশল তৈরি করতে হবে সেই ব্যাপারে আসন্ন করণীয়সমূহ কি হতে তা নিয়েও উক্ত কর্মশালায় আলোচনা করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর