চতুর্থ ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক হাজার ৯ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে তারা নৌবাহিনীর ৩টি জাহাজে করে ভাসানচরে এসে পৌঁছায়। এসময় ঘাটে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
আজ সকাল ১০টার দিকে চট্রগ্রামের পতেঙ্গা নৌবাহিনীর রেডি রেসপন্স বার্থ থেকে তাদের নিয়ে ৩টি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কুয়াশার কারণে চট্রগ্রাম থেকে জাহাজ ছাড়তে এক ঘণ্টা বিলম্ব হয় বলে জানাগেছে। এর আগে, সোমবার সড়ক পথে তারা চট্রগ্রাম এসে পৌঁছান। রাতে তাদের বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠের অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হয়।
ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহে আলম জানান, পূর্বের ন্যায় রোহিঙ্গাদের জাহাজ থেকে নামিয়ে প্রাথমিক মেডিকেল পরীক্ষা শেষে গাড়ি যোগে ওয়্যার হাউজে সমবেত করে ভাসানচরে বসবাসের বিভিন্ন নিয়ম কানুন সর্ম্পকে ব্রিফ প্রদান করা হয়। পরে তাদের ভাসানচরের ক্লাস্টারে স্থানান্তর করা হয়।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগত রোহিঙ্গাদের তিন দিন খাওয়ানো হবে। পরে তাদের রেশন প্রদান করা হবে।
এর আগে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টায় চতুর্থ দফার প্রথম ধাপে দুই হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছে। তাদের মধ্যে ৪৮৫ জন নারী, ৫৭৭ জন পুরুষ ও ৯৪৮ জন শিশু ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে আনুষ্ঠানিকভাবে নারী-পুরুষ, শিশুসহ নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুত ৭, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ক্লাস্টারে তাদেরকে রাখা হয়। প্রথমধাপে ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিশু রয়েছে ৮১০ জন, পুরুষ ৩৬৮ জন, নারী ৪৬৪ জন।
গত ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজার থেকে আরও ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছায়। তাদের মধ্যে ১৩০ জনের বেশি রয়েছে প্রথম দফায় যাওয়া রোহিঙ্গাদের স্বজন। গত বছরের ৮ মে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জল সীমায় ভাসতে থাকা ২৭৭ রোহিঙ্গাদের আরও একটি দলকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগরে বোটে ভাসমান অবস্থা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা দলটিতে ৯২ জন পুরুষ, ১৫৭ জন নারী ও ২৮ জন শিশু ছিল।
গত ২৯ জানুয়ারি ভাসানচরে এসে পৌঁছান এক হাজার ৭৭৬ জন রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে পুরুষ ৪০৪ জন, মহিলা ৫১০ জন এবং আটশত ৬২ জন শিশু রয়েছে। ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১ হাজার ৪৬৭ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছায়। এদের মধ্যে পুরুষ ৩৪৭ জন, মহিলা ৪০৫ জন এবং ৭১৫ জন শিশু ছিলো ।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল হাতিয়ায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠা ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হয়। ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও আগেই শেষ হয় সকল অবকাঠামো নির্মাণ। হাতিয়া থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ১৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার দ্বীপের এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১২০টি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। এতে ১ লাখ রোহিঙ্গা বাসযোগ্য করা হয়েছে।