ধরলার চরে সূর্যমুখীর হাসি, কৃষি সচিবের পরিদর্শন

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম | 2023-08-28 04:52:24

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পতিত চর গুলোতে যেখানে ফসল ফলানো কষ্টকর, সেখানে কুড়িগ্রাম সদরের ধরলার চর মাধবরামের রূপালী চরে সূর্য়ের হাসির মতো সোনালী হাসি হাসছে হাজার হাজার সূর্যমূখী ফুল। প্রতিবছর এসব চরে সীমিত পরিসরে সূর্যমুখী চাষ হলেও এবছর তা বেড়ে প্রায় ২শ’ হেক্টর জমিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। সূর্যমুখীর আবাদ দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। নিজ বিভাগের সহায়তায় চরাঞ্চলে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন দেখতে ছুটে এসেছেন খোদ কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর মাধবরাম গ্রামে মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে এসে ধরলার চরে সূর্যমুখীর খেত পরিদর্শন করেন।

রূপালী চরে সূর্য়ের হাসির মতো সোনালী হাসি হাসছে হাজার হাজার সূর্যমূখী ফুল

রাজস্ব ফলোআপ ও প্রণোদনা কর্মসূচি-২০২১ এর আওতায় সূর্যমুখী আবাদ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কুড়িগ্রামে মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো: আসাদুল্লাহ,রংপুর কৃষি  সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ, কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মঞ্জুরুল হক প্রমুখ।

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক বেড়েছে

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামরবাড়ী সুত্র জানায়, কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক বেড়েছে। গত বছর জেলায় ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হলেও এবছর তা ২শ’ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এ বছর প্রায় ৩২ কোটি টাকা মূল্যে সূর্যমুখী বীজ বিক্রির আশা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। প্রতি হেক্টরে ২ মেট্রিকটন সূর্যমূখী তেল বীজ উৎপাদন হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার তেল বীজ বিক্রি হবে বলে কৃষিবিভাগের প্রত্যাশা।

ধরলার চরে সূর্যমুখীর হাসি, কৃষি সচিবের পরিদর্শন

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, বর্তমানে প্রতি কেজি সূর্যমুখী তেল বীজের দাম ৮০ টাকা। সে হিসেবে এবার জেলায় কমপক্ষে ৩২ কোটি টাকার সুর্যমুখীর তেলবীজ বিক্রির আশা কৃষকদের।

সূর্যমুখী চাষ পরিদর্শন শেষে মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম বলেন, সরকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণে এ অঞ্চলসহ সারাদেশে সূর্যমুখী ও অন্যান্য শস্য উৎপাদনে ব্যাপক কৃষি প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্য দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে যাতে কৃষকরা আরও আগ্রহী হন। এ ব্যাপারে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান কৃষি সচিব।

জেলা কৃষি বিভাগের মতে, ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলায় চার শতাধিক চর রয়েছে। তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রের চরে সুর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ করে চরের কৃষকের ভাগ্য বদলানোর পাশাপাশি দেশের আমদানী নির্ভর ভোজ্য তেলের অনেকটাই যোগান দেয়া সম্ভব। চরের পতিত জমিতে সূর্যমূখী চাষ করে একদিকে যেমন আয় হবে তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাদের। অন্যদিকে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন তারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর