ঢাকা তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের কাছে ১৬ দাবি

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-23 20:46:04

দেশীয় ও বিদেশি তামাক কোম্পানিগুলো কিশোর যুবকদের তামাক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন করে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সস্তা তামাকজাত দ্রব্য মানুষ তামাক ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে, যা সরকারের ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ায় ব্যাহত করবে। কিশোর যুবকদের মাদকের প্রবেশদ্বার তামাক হতে বিরত রাখতে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বাড়াতে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ জরুরি।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রথমবারের মতো আয়োজিত Dhaka Conference on Tobacco or Health 2020 (DCTOH 2020) সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিরা বিভিন্ন গবেষণার আলোকে ঢাকা তামাক নিয়ন্ত্রণ ঘোষণার মাধ্যমে সরকারের কাছে এই দাবি জানান।

সম্মেলনের সারা দেশের ১২০ বেশি সংগঠনের ২৫০ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন, যাতে ২০টি মৌখিক এবং পোস্টারে মাধ্যমে ২৮টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

সম্মেলনে প্লানারী সেশনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।

আলোচক ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ইকবাল মাসুদ এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-র সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ।

সভায় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য (ব্যবহার) নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ। যেখানে ই-সিগারেট/ভেপিংয়ের উৎপাদন, বিতরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।  নিষিদ্ধ, ধূমপানের স্থানের বিধান বাতিল, পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তামাকজাত কোম্পানির যেকোন প্রচারণা কার্যক্রম নিষিদ্ধ, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রর্দশন নিষিদ্ধ, তামাকজাত দ্রব্যে বিক্রয়ে লাইসেন্সিং তৈরি, ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বৃদ্ধি, খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধ, মোড়কে উৎপাদনের তারিখ নিশ্চিত, ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্যের স্ট্যার্ন্ডাড মোড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত, তামাক কোম্পানি প্রভাব বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনভঙ্গের ক্ষেত্রে সরাসরি মামলা দায়ের করার বিধানযুক্ত করা এবং আইনের সকল বিধানে উল্লেখিত জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সম্মেলনে আহবায়ক কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুসারে সরাসরি ও ভার্চুয়াল অতিথিদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, ব্লুমবার্গ ফিলোনথপিক্স-র জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক কেলি হেনিং, দি ইউনিয়নের তামাক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক গেন কোয়ান, ভাইটাল স্ট্যাটেজিস-র রেবেকা পল, জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি ব্লুমবাগ স্কুল অব পাবলিক হেলথের পরিচালক জোয়ানা কোহেন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব জিল্লুর রহমান চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার, অ্যারোমা দত্ত।  

সম্মেলনে আগামী ২০৪০ সালে মধ্যে তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনতে ঢাকা তামাক নিয়ন্ত্রণ ঘোষণায় সরকারের কাছে ১৬ টি দাবি উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে তামাক কোম্পানির দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত নীতি প্রণয়ন বা বিদ্যমান নীতিতে যুক্ত করা, খসড়া জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী চুড়ান্ত, খসড়া জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি গ্রহণ, খসড়া জাতীয় তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুমোদন, কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনতে দেশে একটি জাতীয় কর নীতি প্রণয়ন করা, নীতিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বন্ধে আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে প্রণীত খসড়া গাইড লাইন অনুমোদন, টেকসই বা অব্যাহত অর্থায়নের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” গঠন করা, তামাক কোম্পানির বেআইনী কার্যক্রম বন্ধে বিদ্যমান আইন অনুসারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অর্গানোগ্রাম চুড়ান্ত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের টোব্যাকো ট্যাক্স সেলকে শক্তিশালী করা, তামাকজাত দ্রব্যের জটিল কর কাঠামো বিলুপ্ত করে, তামাকজাত দ্রব্যের উপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করার সুপারিশ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর