প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষোভ

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 00:28:10

প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত সমস্যাদি দীর্ঘদিন পরেও সমাধান না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-আইডিইবি নেতৃবৃন্দ। দীর্ঘদিনেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে। এজন্য দেশব্যাপী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে এখন চরম উদ্বেগজনকভাবে দিনাতিপাত করছে বলে দাবি করেন নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, সদস্যরা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।

মঙ্গলবার (০২ মার্চ) কাকরাইলে আইডিবি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিইবি নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিপন মিয়া, জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, শিক্ষা প্রশিক্ষণ সম্পাদক ইদরীস আলী প্রমুখ।

আইডিইবি’র সভাপতি একেএমএ হামিদ বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। তবে যদি আমাদেরকে বাধ্য করা হয় এবং পথে ঠেলে দেয়া হয় মাঠে নামিয়ে দেয়া হয় তাহলে আমাদের কি করার আছে? প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরতে মাত্র এক ঘণ্টার জন্য আমরা প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়াবো এবং শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে থেকে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা অনুযায়ী প্রাথমিক নিযুক্তিতে অন্যান্য কারিগরি পেশাজীবীদের ন্যায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ১টি স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট ডিজাইন ও প্লানিং এ কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের সহকারী প্রকৌশলীদের ন্যায় ৩টি স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট ব্যক্তিগত ভাতা প্রদানের দাবি করা হয়। এছাড়া সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিসমূহের কর্মরত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার উপসহকারী প্রকৌশলী সমমানের পথ থেকে সহকারি প্রকৌশলী উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির কোটা ৫০ শতাংশ নির্ধারণসহ সর্বোচ্চ পদ পর্যন্ত পদোন্নতিসহ পলিটেকনিক টিএসসি এসএসসি (ভোক) এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শিক্ষক-কর্মচারী শূন্যপদসহ শিক্ষক সংকট নিরসন কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ভাতা ও বৃত্তির টাকা আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশের পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

দাবি বাস্তবায়নে আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান বিএনবিসি সংশোধন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত পেশাগত সমাধানের দাবিতে আগামী ১০ মার্চ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এবং প্রত্যেক জেলা শহরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রেরণের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। জরুরি ভিত্তিতে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তী বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

বিএনবিসি গেজেট প্রকাশিত অসামঞ্জস্যতা তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৬ সালের বিল্ডিং কোডে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদেরকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত বিল্ডিংয়ের স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করার ক্ষমতা দেওয়া হলেও সদ্য প্রকাশিত বিএনবিসি গেজেটে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ভবন নির্মাণে জনগণকে জিম্মি করা এবং একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের হীন উদ্দেশ্যেই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন তারা। একটি গ্রুপের আধিপত্য ও জিম্মির হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার জন্যই স্ট্রাকচারাল ডিজাইনে অভিজ্ঞ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য পাঁচ তলা পর্যন্ত স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করার সুযোগ রাখার দাবি করেন।

স্থাপত্য নকশা ক্ষেত্রে ডিগ্রি আর্কিটেক্ট, ডিগ্রি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা আর্কিটেক্টদের রাখা হলেও ডিপ্লোমা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের রাখা হয়নি। অন্যদিকে কনস্ট্রাকশন সুপারভিশনে ১০ তলার ওপরে বহুতল ভবন নির্মাণ সুপারভিশনের ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারদের ৮ বছরের অভিজ্ঞতা ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ২০ বছরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে; যা অবাস্তব, এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রাচীনতম সংস্থা পিডব্লিউডির অধিকাংশ প্রকৌশলী সুপারভিশনের যোগ্যতা হারাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়- সবশেষ ২০২০ সালে ২ ফেব্রুয়ারি আইডিইবির জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ সংশোধনসহ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত সমস্যাদি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ অনুসারে বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিলেও অদ্যবধি বাস্তবায়িত হয় নাই। দীর্ঘদিনেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে। দেশব্যাপী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে এখন চরম উদ্বেগজনকভাবে দিনাতিপাত করছে। সদস্যরা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। এরই মধ্যে মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মত আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএনবিসির গেজেট।

ছাত্রীরা এ ষড়যন্ত্র ও অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সরকারের উন্নয়ন উৎপাদন অব্যাহত রাখা ও প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প বাস্তবায়নের সকল বাঁধা অতিক্রম করার জন্য এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বাস্তবায়নে বাধাদানকারীদের কে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংগ্রামের কোন বিকল্প নেই বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, বর্তমানে সারা দেশে ৫ লাখের অধিক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে, অন্যদিকে ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ার এর সংখ্যা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর