মশা নিয়ে মেয়র আতিকের হতাশার সুর

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 11:52:41

মশা নিধনে অনেকটা হতাশাই ব্যক্ত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মশক নিধন কর্মীদের মনিটরিংয়ের জন্য আমাদের আরও আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। ফুটপাতের নিচে যে ড্রেন করা হয়েছে, সেখানে একটি টেকনিক্যাল ভুল আছে। ফুটপাত ও ড্রেন নির্মাণের সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কীটতত্ত্ববিদদেরকে রাখতে হবে। কিভাবে ফুটপাতের নীচে ড্রেন তৈরি করলে একই সাথে পানি অপসারণ হবে আবার মশার প্রজননও যাতে না হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা কীটনাশকের পরিমাণ (ডোজিং) নিয়ে চিন্তা করছি। অনেক ক্ষেত্রে মশা নক ডাউন হচ্ছে না। ডোজিং বাড়ানো যায় কিনা সে বিষয়ে কীটতত্ত্ববিদদের সাথে কথা বলছি।

মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) রাজধানীর পাইকপাড়া, দক্ষিণ বিশিল গোদাখালি খাল, পাল পাড়া ঘাট বেড়িবাঁধ, দারুস সালাম ঈদগাহ মাঠে এলাকা পরিদর্শন করেন। এরপর বিকেলে তিনি কচুক্ষেত ইব্রাহিমপুর খাল পরিদর্শনে মেয়র এরকম হতাশা ব্যক্ত করেন।

কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ৮ মার্চ শুরু হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল ভিত্তিক সমন্বিত অভিযান (ক্রাশ প্রোগ্রাম) মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) অব্যাহত ছিল। শুক্রবার ব্যতীত আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। এ ক্রাশ প্রোগ্রামে ডিএনসিসির সকল মশক নিধনকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ মশক নিধনের সাথে যুক্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি অঞ্চলে একদিন করে কাজ করবেন। ডিএনসিসির সকল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণও একসাথে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করছেন। অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মশক নিধনকর্মী মশার কীটনাশক প্রয়োগ করছেন।মঙ্গলবার মিরপুর-১০ অঞ্চলে (অঞ্চল-৪) এ অভিযান সম্পন্ন হয়।

পরিদর্শনকালে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখব এই দশদিনের অভিযান শেষে কি ফল দাঁড়ায়। থার্ড পার্টির কীটতত্ত্ববিদরা আমাকে জানাবে কি কি ভুল হয়েছে। আমি ভুলগুলো আপনাদেরকে জানাবো। এগুলো লুকানোর কিছু নেই। আমরা কীটনাশকের পরিমাণ (ডোজিং) নিয়ে চিন্তা করছি। অনেক ক্ষেত্রে মশা নক ডাউন হচ্ছে না। ডোজিং বাড়ানো যায় কিনা সে বিষয়ে কীটতত্ত্ববিদদের সাথে কথা বলছি।

মেয়র বলেন, ৮ মার্চ আমি সাগুফতা খালে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছি পয়োনিষ্কাশন লাইন খালের ভিতরে। এখানে একটা চ্যালেঞ্জ আমি দেখেছি। আপনারা দেখেছেন ফগিং করেছি ফুটপাথের নিচে যে ড্রেন আছে সেখানে। কীটতত্ত্ববিদগণ আমাকে বলেছেন ফুটপাতের নিচে ড্রেনে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। শহরের আনাচে কানাচে প্রচুর ডোবা আছে। আমাদের চেষ্টার কোন কমতি নেই। আমরা যে পদ্ধতি এখন অবলম্বন করেছি এটা খুবই কষ্টসাধ্য। ডিএনসিসির অন্য নয়টি অঞ্চলের সকল মশক নিধন কর্মী, সকল যন্ত্রপাতি একটি অঞ্চলে নিয়ে এসেছি ব্যাপকভাবে, সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য। অভিযান শেষে প্রতিদিন রাতে আমরা মিটিং করছি অভিযানের পর্যালোচনা করতে।

মেয়র আরও বলেন, এখানে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মশক নিধন কর্মীদের মনিটরিংয়ের জন্য আমাদের আরও আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। ফুটপাতের নিচে যে ড্রেন করা হয়েছে, সেখানে একটি টেকনিক্যাল ভুল আছে। ফুটপাত ও ড্রেন নির্মাণের সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কীটতত্ত্ববিদদেরকে রাখতে হবে। কিভাবে ফুটপাতের নীচে ড্রেন তৈরি করলে একই সাথে পানি অপসারণ হবে আবার মশার প্রজননও যাতে না হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

আতিকুল ইসলাম সবাইকে উদাত্ত আহ্বান জানান, যার যার আঙিনায় ডোবা-নালা ইত্যাদি পরিষ্কার করা হলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভেতরে আমরা মশক নিধন করি না। এগুলো আমাদের জন্য সম্ভব না। পাবলিক ড্রেন, খাল ইত্যাদি নিয়ে আমরা কাজ করব।

আতিকুল ইসলাম জানান, এ অভিযান শেষ হলে মশক নিধন কর্মীদেরকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গতকাল যেসব এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল সেখানে আজ মশার উপদ্রব কমে এসেছে বলেও তিনি জানান।

পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, মতিউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর