স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে সেই বৃদ্ধা মায়ের পাশে পুলিশ

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-20 19:39:47

রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে দেওয়া বৃদ্ধা ফুলজী বেগমের (৮৫) পাশে দাঁড়িয়েছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে নড়াইলের পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে অসুস্থ ফুলজী বেগমকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৃদ্ধাকে দেখতে গিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর একটি অনলাইন পত্রিকায় (বার্তা২৪.কম) বিষয়টি দেখে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃদ্ধা মায়ের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেন এবং বৃদ্ধা মহিলার পাশে দাঁড়াতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ পাঠিয়ে বৃদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা  হয়েছে। এই বৃদ্ধার চিকিৎসাসহ ভরণ-পোষনের দায়িত্ব পুলিশ বহন করবে।’ এই সময় বৃদ্ধার হাতে নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন পুলিশ সুপার।

তিনি আরও বলেন, ‘অসুস্থ্য ওই মাকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনার জন্য দুইজন মহিলা পুলিশ দিনরাত  রাখার জন্য লোহাগড়া থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে দুপুরে বৃদ্ধাকে দেখতে যান জেলা প্রশাসক মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরী ও লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু। এসময় বৃদ্ধাকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক। এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান লিটু বৃদ্ধাকে পাঁচ হাজার টাকা নগদ দেন এবং প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর বিশ্বাস বলেন, ‘এই বৃদ্ধার তিন সন্তানকে আটক করা হলেও লাবু শেখকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং ডাকু শেখ ও মেয়ে কুলসুমকে পুলিশ হেফাজোতে রাখা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, বৃদ্ধা ফুলজী বেগমের স্বামী সামাদ শেখ প্রায় ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। অনেক কষ্ট করে ফুলজী বেগম খেয়ে না খেয়ে তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে বড় করেছেন। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। এখন পাঁচ ছেলে-মেয়ে নিজ নিজ সংসারে ভালোই আছেন।

কিন্তু তাদের কারও সংসারেই বৃদ্ধা মায়ের জন্য জায়গা হচ্ছে না। মায়ের দায়িত্ব নিতে চাই না কোন সন্তান। তাই বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতের আধারে গর্ভধারিণী মাকে বাড়ি থেকে ভ্যানে করে নিয়ে বাঁশ ঝাড়ের নিচে রাস্তায় ফেলে আসে তাঁর ছেলেরা। বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বড় ছেলে ডাকু শেখের বাড়িতে রেখে আসে। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর