স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করায় গৃহবধূকে মারপিট

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-09-01 18:58:15

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করার দায়ে ও তা তুলে না নেওয়ায় ইয়াসমিন আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূকে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

১২ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ধান ক্ষেতের আইলের ওপর গৃহবধূ ইয়াসমিনকে ধরে রেখেছেন দু’জন নারী। আর এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন।

পরে এ ঘটনায় গত ১৮ মার্চ ইয়াসমিনের ভাই মাহবুব বাদী হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সেই মামলার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে সোমবার (২২ মার্চ) আদালতের আসলে কথা হয় তাদের সঙ্গে।

ইয়াসমিন বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবের ফুফা আবুল কালামের ছেলে পাবেল মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় ইয়াসমিন আক্তারের। বিয়ের পর থেকে পাবেল যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছেন। এরই মাঝে যৌতুক না দেওয়ায় দু’বার গর্ভপাত করিয়েছেন স্বামী পাবেল ও তার পরিবারের লোকজন। গত বছরের ১ নভেম্বর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার পরিবার ইয়াসমিনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসা নেন। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে ৮ নভেম্বর বাদী হয়ে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মো. পাবেল মিয়াকে ১ মার্চ গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, পাবেলকে গ্রেফতারের পর তার মামা আনোয়ারুল আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেন। এরই জের ধরে গত ১০ মার্চ বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় আমাকে পেয়ে তার পরিবারের সবাই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যান। পরে আমার ভাই উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে এখনও তারা নানারকম হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) আহমার উজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরই খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি বিষয়টি পারিবারিক। তবে নারীর প্রতি সহিংসতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।

ইতোমধ্যেই দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এসপি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর