অধিক সংক্রমিত এলাকায় আংশিক লকডাউন চান স্বাস্থ্যমন্ত্রী

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 23:39:17

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে এমনসব এলাকায় আংশিক লকডাউন বাস্তবায়ন করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই হিসাবে আগামী দু'একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসতে পারে।

সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুর ১টায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দক্ষিণ ব্লকের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

অন্যদিকে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পরবর্তী চালান সময়মতো না পাওয়া গেলে টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “টিকা কর্মসূচি আমরা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি। এই মাসে টিকার যে চালান আসার কথা ছিল সেই টিকা আমরা পাইনি। সেটা যথাযথ পাওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানিয়েছেন।

“আর যদি যে সংখ্যায় টিকা পাওয়ার কথা তা আমরা পেয়েই যাই, তাহলে আমাদের যে কার্যক্রম চলছে তা ব্যাহত হবে না। আর যদি টিকা না পাই তাহলে স্বাভাবিকভাবেই নতুন করে চিন্তা করতে হবে।”

সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত নভেম্বরের চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে ওই টিকা তা সরবরাহের দায়িত্বে আছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ওই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। সে অনুযায়ী জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ দেশে এলেও বিপুল চাহিদা আর বিশ্বজুড়ে টিকার সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে ফেব্রুয়ারির চালানে বাংলাদেশ ২০ লাখ ডোজ হাতে পায়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক

এর বাইরে ভারত সরকার দুই দফায় উপহার হিসেবে দিয়েছে মোট ৩২ লাখ ডোজ, সেগুলোও সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে ভারত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করায় চুক্তির টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘টিকার জন্য ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে সেখান থেকেও খুব শিগগিরই টিকা পাওয়া যাচ্ছে না।ওখান থেকেও এখন টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। উনারা বলেছেন মে-জুনের আগে কোভেক্সের টিকাও দিতে পারছে না।”

জাহিদ মালেক বলেছেন, সরকার অন্যান্য উৎস থেকেও টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেখান থেকে আশ্বাস পেলে সরকার ইতিবাচকভাবে তা গ্রহণ করবে।

“আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সেখান থেকে যদি কোনো আশ্বাস পাই তাহলেও আমরা পজিটিভলি এগিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চেষ্টা করছেন যাতে আমরা টিকা পাই এবং টিকা কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয়।”

টিকার প্রথম চালান হাতে পাওয়ার পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণ টিকাদান শুরু হয়। আগামী ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করার কথা।

জাহেদ মালেক বলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। মার্চ মাসের শুরুর দিকে সংক্রমণের দুই শতাংশে নেমে এসেছিল। সেটা এখন ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এটা খুবই আশঙ্কাজনক। গত এক সপ্তাহে আক্তান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজার হারিয়েছে। এভাবেই বাড়লে একটা অংশ যদি হাসপাতালে আসে আমাদের পক্ষে সেবা দেওয়াটা দুরূহ হয়ে যাবে।

এরই মধ্যে সব সরকারি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) খালি নেই। বেসরকারি হাসপাতালে কিছু আইসিইউর খালি আছে। আমরা আইসিইউ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছি।

তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ৪০ টি আইসিইউ বিভিন্ন হাসপাতালে‌ যুক্ত হবে। এছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি এইচডিইউ সেন্টার চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেভাবে রোগী বাড়ছে, আমরা যদি আরও আইসিইউ সেন্টার চালু করি, তারপরও সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না।

সংক্রমণের হার যদি একই হারে বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের শুধু আইসিইউ বাড়ালেই হবে না। আমাদের দক্ষ জনবলের অভাব আছে। আইসিইউ চালানোর জন্য দক্ষ টেকনিশিয়ান, চিকিৎসক তৈরি করাও একটি চ্যালেঞ্জের কাজ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর