ত্বকী হত্যার ৫ বছর : থমকে আছে তদন্ত

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-07-06 13:44:42

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার পর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। ত্বকীয় হত্যাকাণ্ড মামলার পরে দায়ের করা এ জেলার অনেক মামলার সুরাহা হলেও চাঞ্চল্যকর ও নির্মম এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। র‌্যাব তদন্ত শেষ করলেও চাপের কারণে অভিযোগপত্র দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। ২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের শায়েস্তা খান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে রফিউর রাব্বির ছেলে ত্বকী নিখোঁজ হয়। এর দুই দিন পর শহরের চারার গোপ এলাকায় কুমুদিনী খালে তার লাশ মেলে। ত্বকী নারায়ণগঞ্জ শহরের এবিসি স্কুলের ‘এ’ লেভেল শিক্ষার্থী ছিল। রফিউর রাব্বি তখন সদর মডেল থানায় অভিযোগ করেছিলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আইভীর পক্ষে কাজ করা, পবিরহন সেক্টরে চাঁদাবাজি ও বর্ধিত ভাড়া কমানোর দাবিতে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম গঠন করে আন্দোলনে নামার কারণে ক্ষুব্ধ একটি মহল তার ছেলেকে হত্যা করে। তিনি অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন বলে নারায়ণগঞ্জের পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন জানিয়েছেন। মামলাটি প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ তদন্ত করলেও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। বাদীর আবেদনে উচ্চ আদালত মামলাটি পরে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ র‌্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহা-পরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান সাংবাদিকদের বলেছিলেনন, “ত্বকী হত্যাকাণ্ডে আজমেরী ওসমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিগগিরই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।” তারপর চার বছর চলে গেলেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি র‌্যাব। মামলাটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে র‌্যাব ১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান বলেন, “তদন্ত চলমান। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত পারা যায় তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে। যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর একটি মামলা, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটির তদন্ত করছি। তদন্ত থেমে নেই।” রাব্বির বাবার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, কোনো চাপ নেই। যেকোনো তদন্তের জন্য তদন্ত সংস্থার বড় কাজ হচ্ছে নির্ভুল তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া। “এখানে সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আইনানুগভাবে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করা। এ বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। যত দ্রুততার সঙ্গে তদন্তকাজ শেষ করা যায় তার চেষ্টা চলছে।” নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অভিযোগপত্র দিতে বিলম্ব হওয়ায় সমালোচনা করেছেন। ধীমান বলেন, “বিচারে উদাসীনতায় সারাদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতেই ত্বকী হত্যার বিচার করা উচিত। ত্বকী হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।” নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনও ত্বকী হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর