প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ একথা মাথায় রেখে কাজ করার আহ্বান

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 22:31:26

প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ একথা মাথায় রেখেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের মালিক। সে জনগণ হতদরিদ্র হোক, একজন কৃষক, হোক একজন শ্রমিক সেও কিন্তু এদেশের মালিক। অর্থাৎ জনগণই হচ্ছে মালিক। আমাদের সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদেও কিন্তু এ কথাই বলা আছে। এ কথা মাথায় রেখেই আপনারা তাদের সেবা দেবেন এটাই আমি চাই।

বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে বিসিএস কর্মকর্তাগণের ৭১তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিসিএস কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের জন্যই আপনাদের কাজ করতে হবে। মহান মুক্তিসংগ্রামের এবং মুক্তিযুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। তাই বাংলাদেশ হবে ধর্ম-লিঙ্গ-ধনী-দরিদ্র কোন ভেদাভেদ নয়। মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখে তাদের সার্বিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তাদেরকে সমান অধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে। সেই মানসিকতা নিয়েই আপনারা জনগণের সেবা করবেন, সেটাই আমি চাই। কারণ কেউ তো ইচ্ছা করে দরিদ্র হয়ে জন্মায় না, আর দরিদ্র হয়ে জন্মালেই তাকে অপবাদ দিতে পারেন না। বরং তাকে সাহায্য করা দরকার। যেন উঠে দাঁড়াতে পারে, সমাজে যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারে।

সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে জাতির পিতার দেওয়া ভাষণের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনি চাকরি করেন আপনার মাইনে দেয় এই গরিব কৃষক, আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ওই টাকায় আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায় ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন, ওরাই মালিক। বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের মালিক। সে জনগণ হতদরিদ্র হোক একজন কৃষক হোক শ্রমিক হোক সেও কিন্তু এদেশের মালিক। অর্থাৎ জনগণই হচ্ছে মালিক।

তিনি বলেন, কর্মজীবনে বৃহত্তর পরিসরে ফিরে গিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান যথার্থভাবে প্রয়োগ করবেন। জনসেবা দেশপ্রেমিক মনোভাব সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন ও সমুন্নত রাখতে উদ্যোগী হবেন। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে দেশকে গড়ে তুলবেন।

তিনি বলেন, একটানা সরকারের আছি বলেই দেশের উন্নয়নের কাজগুলি ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছি। করোনাভাইরাস আজকের সারাবিশ্বটাকেই তোলপাড় করে দিয়েছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুতে একটা বাধা আসছে। কিন্তু তারপরেও আমাদের প্রচেষ্টা রয়ে গেছে, এরপরে আমরা বাজেট প্রণয়ন করেছি। আমরা পরিকল্পনাগুলি হাতি নিচ্ছি হয়তো কিছুদিনের জন্য সবকিছু থমকে গিয়েছিল তারপরে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রেখেছি। কারণ আমাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমি জানি আমার এখন যে বয়স তাতে ২০৪১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করার মত বা বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আজকে যারা নবীন অফিসার দায়িত্ব নিয়ে কর্ম ক্ষেত্রে কাজে যাবেন আপনাদের ওপরই দায়িত্ব পড়বে। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হচ্ছে আজকের নতুন প্রজন্ম। যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে যোগ দেবেন। এ কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে সততার সাথে নিষ্ঠার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সব সময় একটা কথা মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি, আমরা বাঙালি, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে চলবো। ১৯৭৫ সালে সে সম্মান আমরা হারিয়ে ছিলাম কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত নিরলস পরিশ্রম করে সে সম্মান আবার আমরা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ভবিষ্যতে যেন আর কখনো এ সম্মান নষ্ট না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর