ফারমার্স ব্যাংকে বন্দরের মজুদ টাকার বিনিয়োগ নিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 02:44:18

দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, অনিয়ম ও অবৈধ সুবিধা দেওয়া-নেওয়াসহ নানা কারণে বিপর্যস্ত ফারমার্স ব্যাংক। এর প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপর। ফারমার্স ব্যাংকে বন্দরের মজুদ টাকার বিনিয়োগ করে এখন বিপাকে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ নীতিমালায় ব্যাংকের ক্যামেল রেটিং দেখে বিনিয়োগ করার নির্দেশনা রয়েছে। একইসঙ্গে ফার্স্ট জেনারেশন, সেকেন্ড জেনারেশন ক্যাটাগরি করে তার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। সাধারণত ফার্স্ট জেনারেশন ব্যাংকগুলো আর্থিক দিক ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দক্ষ। নীতিমালা অনুযায়ী একটি ব্যাংকের একটিমাত্র শাখায় এবং ওই শাখা নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় বিনিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের ৫/৭টি পর্যন্ত শাখায় বিনিয়োগ তহবিল জমা রাখা হয়েছে। মূলত মন্ত্রণালয়ের প্রভাব, বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আত্মীয় ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক এবং সর্বোপরি প্রভাব খাটিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বিনিয়োগ বিভিন্ন ব্যাংক ও শাখায় দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের মজুদ টাকার বিনিয়োগে নীতিমালা না মানায় বন্দরের তহবিল নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছিল। এই কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩টি ব্যাংকে বিনিয়োগকৃত সব অর্থ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংক ৩টি হচ্ছে ফারমার্স ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক লি. এবং এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। ফারমার্স ব্যাংকে থাকা প্রায় ১৭০ কোটি টাকা নিয়ে বেশি সংকটে পড়েছে চবক।

কারণ সাম্প্রতিক সময়ে এই ব্যাংক নিয়ে ব্যাপক কেলেঙ্কারির সংবাদে চবক তার বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে। অনেক চেষ্টার পর ফারমার্স ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকার পে-অর্ডার দিলেও সেটি নগদায়ন হয়নি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ফাইন্যান্স) কামরুল আমিন বলেন, ফারমার্স ব্যাংকের চেক ফেরত আসায় আপাতত তিনটি ব্যাংক থেকে জমা টাকা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য গতমাসে বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা ফেরত পেতে সহযোগিতার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আবারও তাগাদা দেওয়া হবে। আগামীতে ব্যাংকে বন্দরের টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর রেটিংসহ সার্বিক দিক যাচাই-বাছাই করা হবে।

এদিকে বন্দর তহবিল থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ২০১৫-১৬ সালে এই টাকা নেওয়া হলেও এখনও কোনো টাকা কিস্তি হিসেবে ফেরত পায়নি বন্দর। এছাড়া এই তহবিল থেকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ লালখানবাজার থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য টাকা চেয়েছিল। কিন্তু সেটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর