থমকে গেছে ৬ নারীর স্বপ্ন!

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-28 07:06:04

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ৬ নারী। দরিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম তাদের। এই সংগ্রামে জয়ের স্বপ্নে শিখেছেন শতরঞ্জি পণ্যের কাজ। দৃঢ় মনোবল নিয়ে এ কাজটি শিখলেও অর্থাভাবে আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারছে না তারা। ফলে স্বপ্ন পুরণে থমকে গেছে ওই ছয় নারী।

পালাশবাড়ী উপজেলার ঢোলভাঙ্গা সংলগ্ন পার আমলাগাছী গ্রামের ওই নারীরা হলেন, বিধবা লাইজু বেওয়া (৩৬), ফাতেমা বেওয়া (৩১) ও শান্তনা বেওয়া (৩৫)। এছাড়াও স্বামী নিগৃহীতা মনজুয়ারা বেগম (৪০), হাওয়া বেগম (৪৫) ও শিরিনা বেগম (২০)। তাদের কারো স্বামী মারা গেছেন আবার কেউ কেউ স্বামী পরিত্যাক্তা হয়েছেন। সবার পুণরায় ঠাঁই হয়েছে বাবার বাড়িতে।সেখানে সন্তানাদি নিয়ে কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করে চলছেন তারা।যেনো নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের। এসব নারীরা জীবিকার তাগিদে ঝি’র কাজ করাসহ দর্জি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন অন্যত্র। সেটিও করোনা পরিস্থিতিতে সম্ভব হচ্ছে না। এই দরিদ্রতার কষাঘাত থেকে রক্ষায় নানা চেষ্টা অব্যাহত ছিলো তাদের। বিধবা লাইজু বেওয়ার নেতৃত্বে দরিদ্রতা ঘোচানোর স্বপ্ন দেখেন সবাই। সেটির বাস্তব রূপ দিতে এরই মধ্যে গণউন্নয়ন কেন্দ্রের সিপ প্রকল্পের আওতায় তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে শতরঞ্জি শিল্পের পণ্য বুনন কাজের। তাদের হাতের নিপুণতায় শিখতে পেরেছে পাপোশ, ঝুট পাপোশ. টেবিল মেট, ওয়াল মেট, জায় নামাজসহ নানা ধরণের পণ্যসামগ্রী তৈরীর কাজ। এই উদপাদক দলে আরও ৯ নারীসহ উল্লেখিত বিধবা-স্বামী নিগৃহীতা ৬ নারী টানা ৩৫ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে দক্ষতা অর্জন করেছে।

বর্তমান তারা প্রশিক্ষনটি শেষ করলেও, আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারছে না। এ শিল্পের কারাখানা স্থাপন করতে বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন হয়। এই অর্থের যোগান দিতে পারছে না তারা। ফলে অর্থাভাবে আটকে গেছে দারিদ্র জয়ের স্বপ্ন।

বিধবা লাইজু বেওয়া ও শান্তনা বেওয়া বলেন, শতরঞ্জির পণ্য তৈরীতে কোনো যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র বাঁশ-রশি দিয়ে মাটির উপর সুতো দিয়ে টানা প্রস্তত করে সুতা গননা করে হাত দিয়ে নকশা করে সৌন্দর্য্য ও টেকসই পণ্য উদপান করা যায়।

তারা আরও বলেন, শতরঞ্জির কাজটি অনেকটাই লাভজনক। কিন্তু টাকার অভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাতে পারছি না।

স্বামী নিগৃহীতা হাওয়া বেগম ও শিরিনা বেগম জানায়, নানা অভাব অনটনের সংসার তাদের। জীবন মানোন্নয়নে শতরঞ্জির পণ্য বুনন কাজ শেখা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে কারখানা স্থাপন করতে পারলে নিজে স্বাবলম্বী হওয়াসহ এলাকার আরও বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। তবে অর্থাভাবে এটি বাস্তবায়ন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।    

গণউন্নয়ন কেন্দ্রের সিপ প্রকল্পের ফিল্ড ফ্যাসিলিটর পুতুল চক্রবর্তী জানান, প্রশক্ষিণে ওইসব নারীরা দক্ষতা অর্জন করেছে। তারা যদি নিজ নিজ কারখানা স্থাপন করতে পারে, তাহলে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। সেই সঙ্গে প্রকল্প কর্তৃক তাদের সহযোগিতা করা যেতে পারে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর