শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে ঘরমুখী মানুষের প্রচণ্ড চাপ

, জাতীয়

মোঃরুবেল ইসলাম তাহমিদ, বার্তা২৪.কম, মুন্সীগঞ্জ | 2023-08-25 16:50:25

ঠেকানো যাচ্ছে না কঠোর লকডাউনের আগেই ঘাট এলাকায় মানুষের জোয়ার। কঠোর লকডাউনের আগেই বাড়ি ফিরতে হবে। তাই মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া হয়ে মাদারীপরের -বাংলাবাজার নৌ-রুটে হয়ে বাড়ি ফিরছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের ঘরে ফেরার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

লকডাউনকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের চাপ নিতে পারছে না মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট। কোন ঈদের পূর্বে এত লোকের সমাগম হয়নি মাওয়া ঘাটে। ঘরমুখী মানুষের চাপ পরেছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি করোনা কিছুই মানছে না যাত্রীরা। এখানে মনে হচ্ছে করোনা তাদের দেখে পালিয়ে গেছে।

বেশিরভাগ যাত্রীর মুখে মাক্স নেই, করোনার ভয় নেই, স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। সকল কিছুর উর্ধ্বে উঠে বাড়িতে যেতে পারলেই মনে হয় করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এমনটাই যাত্রীদের মনোভাব।

ঘাট এলাকায় মানুষের জোয়ার

 

যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের গন্তব্য এখন বাড়ি। কি হচ্ছে, কি মানছি কি মানছি না এসব বিষয় দেখার প্রয়োজন নেই। বাড়িতে যেতে পারলেই অন্তত পক্ষে ডালভাত খেয়ে বাঁচা যাবে। ঢাকায় বসবাস করলেতো বাঁচা যাবে না।

প্রথম রোজার আগের দিনটিতে লঞ্চ বন্ধ থাকলেও ফেরি, ট্রলার ও কিছু কিছু স্পিডবোটে করে পদ্মা পার হয়ে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে যাচ্ছেন যাত্রীরা। বাসচলাচল বন্ধ ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলার আর মোটর সাইকেলে করে ঘাটে এসেছেন তারা। নৌ ও স্থলপথে যানবাহনে বাড়তি ভাড়া দিয়ে কঠোর লকডাউনের একদিন আগেই বাড়ি ফিরছেন সাধারণ এ মানুষ গুলো ।

যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানায়, লকডাউনে ঢাকায় থেকে কোনো লাভ নাই। শুধু খরচ বাড়বে। তাই বাড়ি যাচ্ছেন তারা। জাকির নামে ঘরমুখো এক যাত্রী বলেন, কাল (বুধবার) থেকে সব কিছু বন্ধ থাকবে। ঢাকায় থেকে কি করবো? তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি।

অপর যাত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ঈদের তিন/চার দিন আগে বাড়িতে যাওয়া হয়। কিন্তু এবার লকডাউন আর করোনা পরিস্থিতির কারণে রোজার আগেই বাড়ি যাচ্ছি। রোজার পুরো মাস বাড়িতেই থাকবো।

শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ ঘোষণায় মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকে। ফেরিতে যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। লঞ্চ বন্ধ থাকলেও কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই ফেরি, স্পিডবোট ও ট্রলারে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে বাড়ি ফিরছেন। এই সুযোগে তিন থেকে চার গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন যানবাহন মালিকরা।

এদিকে ঘাট এলাকায় হাজারের অধিক ব্যাক্তিগত ও শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন অবস্থান করছে। এসব যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ। করোনার কারণে বেকার হয়ে অনেক পরিবার তাদের আসবাবপত্রসহ পিকাপ যোগে ঢাকা ছেড়ে মাওয়া ঘাট পার হচ্ছে।

মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির জানান, ঘাট এলাকায় আটশতাধিক গাড়ি রয়েছে পারাপারের অপেক্ষায়। মাওয়া চৌরাস্তা থেকে মহাসড়কে পাশে দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় আছে।

ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় থাকা শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক

 

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ফেরিঘাটের মেরিন অফিসার মোঃ আহম্মেদ আলী জানায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত সপ্তাহের সোমবার থেকে সাত দিন সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে উভয় ঘাটে দুটি ছোট ফেরি চালু রাখতে বলা হয়। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ফেরি কম চলায় ঘাটে মালবাহী ট্রাকের জট সৃষ্টি হওয়ায় গত রোববার থেকে ১৫টি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি এর শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সাহাদাৎ হোসেন বলেন, সকাল৬ টা থেকে ১৫টি ফেরি চলছে। শিমুলিয়া থেকে অসংখ্য যাত্রী পার হয়ে আসছে ফেরিতে। এদিকে শিমুলিয়া ঘাটে কমপক্ষে ১৫শ ছোট বড় যান অপেক্ষায় রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর