অবশেষে দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে স্থলপথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত ১৪ দিনের জন্য ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। তবে এপথে দুই দেশের মধ্যে যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সটি সচল রয়েছে।
জানা যায়, দিন যতই বাড়ছে ভারত ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ ও আক্রান্ত বাড়ছে। এমন কি ভারত ভ্রমণে অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে জীবন ও হারাচ্ছেন। দেশে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুও মিছিলও বাড়ছে। মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি তারাও ভারত ভ্রমণে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির বিষয়ে সম্প্রতি সতর্ক করেছে। বিষয়টি মাথায় রেখে গত মাসের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ সরকার সতর্কতা হিসাবে ১৮টি বিধি নিষেধ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ইমিগ্রেশন সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠায়। এর মধ্যে একটি ধারা ছিল যারা ভারত থেকে ফিরবেন অবশ্যয় ব্যক্তিগত খরচে ১৪ দিন বেনাপোলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পরে সংক্রমণ ঝুঁকি মুক্ত হলে ফিরবেন বাড়িতে। কিন্তু এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রনে আনা যাচ্ছিল না। অবশেষে বাধ্য হয়ে গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরী বৈঠকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত বন্ধে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।
এদিকে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। আবার অনেকে মনে করছেন ফ’র্ব ঘোষণায় দুই দিনের সময় বেধে দিলে ভাল হতো। হঠাৎ করে ইমিগ্রেশন বন্ধ কার্যক্রম ঘোষণার এ তথ্য জানতে না পারা অনেকে যাত্রী সকাল থেকে ভিড় করছেন বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে। এসব যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে চিকিৎসা সেবী,বাণিজ্য ও শিক্ষা গ্রহণে যাতায়াতকারী। আটকে পড়া এসব যাত্রীদের অনেকের একদিকে যেমন ভিসা শেষের পথে তেমনি অর্থনৈতিক অবস্থাও সংকটের মধ্যে। এতে বলতে গেলে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা(ওসি) আহসান হাবিব জানান, ১৪ দিন ইমিগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনা পত্র ইতিমধ্যে তিনি হাতে পেয়েছেন। সকাল থেকে যাত্রীদের পাসপোর্টের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে চিঠির তথ্য অনুযায়ী হাইকমিশনার কর্তৃক বিশেষ অনুমতি পত্র যদি কারো থাকে তার যাতায়াতে বাঁধা নেই।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সকাল থেকে কোন যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেনি। ভারত থেকেও কোন যাত্রী বাংলাদেশে আসেনি। তবে বাণিজ্যেও ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ না থাকায় এপথে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস সচল রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, গতকাল সর্বশেষ ভারত থেকে ৫৭০ জন বাংলাদেশি ফিরেছেন। এসব যাত্রীদের মধ্যে ৩ জন যাত্রী ছিলেন করোনা পজেটিভ। এরা ভারতে গিয়েই করোনা আক্রান্তের শিকার হয়। আক্রান্তদের যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এবং করোনা নেগেটিভ সনদ বিহীন ১১ জনকে বেনাপোল রজনীগন্ধা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।।