সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশের ন্যায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধে কঠোর অবস্থানে মানিকগঞ্জের গোলড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ। পোশাক কারখানার শ্রমিকবাহী বাস ছাড়া অন্যান্য যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কে পেলেই ইচ্ছেমত মামলা দিচ্ছে হাইওয়ে থানা পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষে মহাসড়কে সকল রকমের থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে সরকার। যা অনেকটা নিয়ন্ত্রনেও ছিলো ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার পেলেই জব্দ করতো হাইওয়ে পুলিশ। তবে অজ্ঞাত কারণে এসব নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলারের দখলেই এখন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক।
মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে তিন চাকার ইঞ্জিন চালিত রিকশা-ভ্যানের স্ট্যান্ড। কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই হাইওয়ে থানা আঙ্গিনার সামনে দিয়ে দেদারসে চলাচল করছে এসব রিকশা-ভ্যান। এতে করে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এসব বিষয়ে হাইওয়ে থানা পুলিশের উদাসিনতাকে দায়ী করছে জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক চালকসহ সংশ্লিষ্টরা। খুব দ্রুত মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধের আহ্বান জানান ঢাকা আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী ট্রাক চালকেরা।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কালামপুর, শ্রীরামপুর, সূতিপাড়া, বাথুলী, বারবাড়িয়া, নয়াডিঙ্গী, গোলড়া, জাগীর ব্রীজ, মানিকগঞ্জ জেলখানা, পল্লী বিদ্যুত, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও তরা এলাকায় অস্থায়ী রিকশা-ভ্যানের স্ট্যান্ডে হাকডাক দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায় থ্রি-হুইলার চালকদেরকে।
মানিকগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় আলাপ হলে মিজানুর রহমান নামের এক রিকশা চালক জানান, আগে আঞ্চলিক সড়কে রিকশা চালাতেন তিনি। তবে লকডাউনের পর থেকে অনেকেই মহাসড়কে রিকশা-ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিনি দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করছে। এই সুযোগে তিনিও বেশ কিছুদিন ধরে নিয়মিত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইঞ্জিন চালিত রিকশা চালাচ্ছেন।
মহাসড়কের বারবাড়িয়া ও বাথুলী এলাকায় একাধিক থ্রি-হুইলার চালক জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যে গোলড়া হাইওয়ে থানা টহল পুলিশের লোকজন রিকশা-ভ্যান আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাত সাড়ে নয়টার পর আবার ছেড়েও দেয়। তবে এর জন্য ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। গোলড়া হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস এসব কাজে বেশ পারদর্শী বলে মন্তব্য করেন তারা।
পাটুরিয়াগামী জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক চালক আফজাল হোসেন বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে মহাসড়ক অনেকটা ফাঁকা হলেও এখন মাহসড়কে ট্রাক চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের রাজা এখন থ্রি-হুইলার। যে যেভাবে পাড়ছে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে করে খুব সতর্কতার সঙ্গে ট্রাক চালাতে হচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গোলড়া হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন, অর্থ লেনদেন করে থ্রি-হুইলার ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। তবে গত কয়েকদিন ধরে নানা ব্যস্ততার মাঝে ডিউটি করার কারণে থ্রি-হুইলার খুব কম জব্দ করা হয়েছে।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, মহাসড়ক এলাকায় থ্রি-হুইলার চালানোর কোন সুযোগ নেই। মহাসড়ক এলাকায় থ্রি-হুইলার পেলেই জব্দ করে মামলা দেওয়া হয়। চলতি মাসেও ১৫/২০ টি মামলা দেওয়া হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান বলেন, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলের কোন সুযোগ নেই। প্রতিদিনই থ্রি-হুইলারের বিরদ্ধে ৫/১০ টি করে মামলা হচ্ছে। এরপরও ঢাকা আরিচা মহাসড়কের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।