তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ খুলনার জনজীবন, বৃষ্টির অপেক্ষা

, জাতীয়

মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা | 2023-09-01 13:38:51

চৈত্র থেকেই খুলনার জনজীবন গরমে হাঁসফাঁস করছে। সর্বত্রই যেনো ত্রাহী অবস্থা। সূর্যোদয় থেকে সূর্যস্ত পর্যন্ত রোদের তেজস্ক্রীয়তায় ঘর থেকে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে। মধ্য রমজান চলাকালে তীব্র তাপদাহে নাভিশ্বাস উঠছে খুলনার জনজীবনে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় খুলনায় চলছে তীব্র দাবদাহ। মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির। বাতাসে যেনো আগুনের তাপ। কোথাও স্বস্তি নেই। টানা কয়েকদিনের তাপদাহে জনজীবনে নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। এমন গরম অব্যাহত রয়েছে প্রায় ১ মাস। দিনে যেমন রোদের খরতাপ তেমনি রাতেও ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠছে খুলনার মানুষ।

খুলনার বি‌ভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি না থাকায় অসহনীয় এমন গরম হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। গরম বাড়ার সাথে সাথে ডাব, বেল, তরমুজ, বাঙ্গি, শসা ও খিরাইসহ পানি জাতীয় ফল ও সবজির দাম বাড়ছে হু-হু করে। দিনের অ‌ধিকাংশ সময় শিশুরা গরম থেকে বাঁচতে জলকেলিতে মত্ত থাকছে। একটু শীতলতার আশায় গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া মানুষ। রোজা রেখে শ্রমজীবী খেটে-খাওয়া মানুষেরা প্রখর রোদে কাজ শেষে ইফতারের সময় হাতের নাগালে থাকা অস্বাস্থ্যকর ঠান্ডা শরবত খেয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি। সবাই ধারণা করছে বৃষ্টি হলেই তীব্র গরমের এ দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পাবে সবাই।

পানির জন্য যাচ্ছে গ্রামের নারীরা

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা মোঃ আমিরুল আজাদ বার্তা২৪. কম কে বলেন, বৃষ্টি না থাকায় অসহনীয় এমন গরম হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। খুলনা অঞ্চলে বর্তমানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) খুলনাসহ আশপাশের এলাকায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দুদিন আগে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী ছা‌ড়িয়ে‌ছিলো। আগামী আরো কয়েকদিন এ গরমের তীব্রতা থাকতে পারে। তবে বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কমতে পা‌রে।

এ‌দিকে খুলনা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায়, দুর্বিষহ গরমে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা অসুখে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে সবাই। এর ভেতরে গরমে বেশী অসুস্থ্য হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অধিকাংশই হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, পানিশূন্যতা ও গরমে অসুস্থ্য হওয়া রোগী।

খুলনা শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: কামরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন যাবত গরমের কারণে শিশু রোগীদের চাপ বেড়েছে। গরমে অসুস্থ্য হওয়া শিশুদের চিকিৎসা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন শিশুদের পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়া বেশী হচ্ছে। এসময় শিশুরা পানিশূন্যতা রোগে সবচেয়ে বেশি ভোগে তাই প্রচন্ড গরম কিংবা রোদ থেকে যতটুকু সম্ভব শিশুদের নিরাপদে রাখতে হবে পাশাপাশি বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। সড়কের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খোলা আকাশে কিংবা ফুটপাতে বিক্রি করা শরবতসহ অন্যান্য খোলা খাবার খেয়েও পেটের ব্যথা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

শিশু থেকে শুরু করে সবাইকে ফুটপাতের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এ চিকিৎসক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর