সরকারি গুদামে থেকে নিম্নমানের চাল সরবরাহের অভিযোগ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর | 2023-08-31 20:46:24

মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে সরবরাহকৃত চালের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় খাদ্য গুদামে রক্ষিত চাল পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুরে পরিদর্শক দলটি দুটি খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারি কম দামে চাল ক্রয় এবং দীর্ঘদিন মজুদ থাকায় চালের মান নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি গাংনী উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয় বিভিন্ন ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারীদের। নয়টি ইউনিয়নে সরবরাহকৃত চাল নিয়ে বিপাকে পড়েন জনপ্রতিনিধিরা। অবশেষে অসহায় দুস্থরা অভাবের কাছে হেরে গিয়ে ওই চাল গ্রহণ করেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ অবগত হন। অভিযোগ পেয়ে মেহেরপুর- আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন, উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ ও উপজেলা কৃষি অফিসার খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে যান।

গাংনী উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান জানান, গেল মাসে ভিজিডির চাল সরবরাহ করার সময় জনপ্রতিনিধিরা চালের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিষয়টি অবগত হয়ে এ চাল ভিজিডির কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ যাতে করা যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন।

খাদ্য বিভাগের একটি সুত্র জানায়, গেল বছর করোনাকালীন পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকট দূর করার লক্ষ্যে সরকারি নির্দেশে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল ক্রয় করে গাংনী খাদা গুদাম কর্তৃপক্ষ। তবে চালের বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারি দরের মধ্যে ছিল বড় ফারাক। ৩৬ টাকা কেজিতে গুদামে চাল কেনা হয় আর বাজারে চাউলের মূল্য ছিল ৪৪-৪৬ টাকা পর্যন্ত। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মান সম্মত চাউল কেনা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে দীর্ঘ ১০ থেকে ১১ মাস গুদামে চাউল মজুদ থাকায় এর রং পরিবর্তন হচ্ছে এবং দিন দিন মান কমে যাচ্ছে। সংরক্ষণের ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে যদি চাউলগুলো ব্যবহার করা যেতো তাহলে মান নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকতো না। 

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বরদের অভিযোগ পেয়ে ওসি এলএসডিকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি নিম্নমানের চালের বিষয়টি স্বীকার করেন।

তিনি আরো জানান, চাল নিম্নমানের কিভাবে হয়েছে এবং এ চাল কোথা থেকে আনা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চান এবং কিভাবে সমাধান করা যায় তার ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু আজো কোন সদুত্তোর পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। চালের মান খারাপের বিষয়ে জেলা প্রশাসক এবং মন্ত্রণালয়ে জানাবেন এবং এই চাল কি করা হবে তার সিদ্ধান্ত চাইবেন বলেও জানান তিনি।

উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক জানান, জনপ্রতিনিধি ও দলীয় লোকজনের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তিনি পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি প্রমাণ পেয়েছেন চাল নিম্নমানের। সমাধানের জন্য ওসি এলএসডিকে বলেন।

গাংনী আসনের সাংসদ সাহিদুজ্জামান খোকন জানান, বেশ কিছুদিন যাবত তিনি নিম্নমানের চালের ব্যাপারে শুনছেন। বিষয়টি তদন্তে এসে তার সত্যতা পান। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজকে পারবর্তী করণীয কি তার ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, বর্তমানে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে স্থাপিত ১ নম্বর খাদ্য গুদামে ৭৮.৭৮৬ মেট্রিক টন এবং ২নং গুদামে ১৫৪.৮৬০ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর