সাতক্ষীরায় প্রতারক চক্রের আনাগোনা

, জাতীয়

আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা | 2023-09-01 04:05:20

কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয়ে এক মিষ্টান্ন বিক্রেতার নিকট ৪০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। ঘটনাটি প্রতারক চক্রের অপকৌশল সেটা নিশ্চিত হওয়ার পর থানায় জিডি করেছেন ওই ব্যবসায়ী। অপরদিকে ইউএনও পরিচয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দাবির বিষয়টি জানার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সতর্কতামূলক পোস্ট দিয়েছেন কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলাম।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের পীরগাজন গ্রামের ইমাম আলী সরদারের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৮) এর কদমতলা বাজারে ‘নাফিজ মিষ্টান্ন ভান্ডার’ নামে একটি দোকান রয়েছে। গত ৬ মে বেলা ১২টার দিকে রতনপুর ইউপি’র ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মাসুম বিল্লাহ সুজন (৩৫) ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের নিকট যেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কথা বলবে বলে মোবাইল তার কাছে দেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয় দিয়ে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর জানাতে বলেন।

পরবর্তীতে ওই ব্যবসায়ীর ব্যবহৃত ০১৯৩৭২৭৯৫৩৫ নাম্বারে বেলা ১২টা ২০ মিনিটে ০১৬১০৯০১৫৭৬ নং থেকে ইউএনও পরিচয়ে ফোন করে বলেন, বর্তমানে করোনাকালীন সময় সকল দোকানপাট বন্ধ এবং মিষ্টির দোকানের উপর চাপ অনেক আছে, সে ক্ষেত্রে আমরা অপারেশনে আসলে আপনাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করবো। আপনি যদি জরিমানা খেতে না চান তাহলে আমার এই নম্বরে ৪০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেন। এরপর ০১৬১০৪৭৩৩২০ নম্বর থেকে একাধিকবার ফোন দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হয়।

এদিকে ইউএনও পরিচয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দাবির বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ‘ইউএনও কালিগঞ্জ সাতক্ষীরা ইউএনও’ ফেসবুক আইডি থেকে সতর্কবাণী প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নামে ০১৭৫৪৭৩৬৫৭১ ক্লোন করে বা অন্য কোন ফোন নম্বর থেকে মোবাইল কোর্ট করা হবে কথা বলে হয়রানি করছে মর্মে শোনা গেছে। এ বিষয়ে কোন রকম আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। কোন বিকাশ নম্বরে বা সরাসরি কোন ব্যাপারে কারো কথায় কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করবেন না।

এসকল প্রতারককে কোনও কোনও জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশ সহযোগিতা করছে বলে শোনা গেছে। তাদের অবগত এবং করার জন্য জানাচ্ছি যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কখনই কোনও প্রকার মোবাইল করে বা অন্য কোনও কথা বলে দোকানদার বা অন্য কারো কাছে টাকা পয়সা দাবি করেন না। দোকানদার বা অন্যান্য লোকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি বা গ্রামপুলিশ সহযোগিতা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

বিশেষ উল্লেখ্য যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কোনও বিকাশ নাম্বার নেই। প্রতারিত হওয়ার পূর্বে ০১৭৫৪৭৩৬৫৭১ নম্বরে ফিরতি কল করে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে, বিকাশ নম্বর হ্যাক করে গ্রাহকদের একাউন্টে টাকা উত্তোলন করার একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী গ্রাহক থানায় জিডি করেছেন। প্রতারক চক্রের এমন বেপরোয়া কর্মকান্ডে জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এদের চিহিৃত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর