‘গ্রেনেড হামলাকারীদের ফাঁসি চাই’

ঢাকা, জাতীয়

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-12-14 18:52:23

প্রথম গ্রেনেডটি বিস্ফোরণের পর পরই চারদিকে মানুষের ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণে মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। মুহুর্মুহু গ্রেনেড বিস্ফোরণে আহত মানুষগুলো যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছিল। এ দৃশ্য চোখে দেখার মতো না।

বার্তা২৪.কমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এমন বিভীষিকাময় ঘটনার এভাবেই বর্ণনা দিয়েছেন দুই প্রত্যক্ষদর্শী মো.ইনসুর আলী ও মো.কিরণ। তাদের একটাই চাওয়া হামলাকারীদের যেন সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি হয়। আগামী ১০ অক্টোবর বহুল প্রতীক্ষিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

 

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক এক কালো অধ্যায়। এ হামলার মাধ্যমে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করাই একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল না ষড়যন্ত্রকারীদের, তারা চেয়েছিল দেশের রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগকে চিরতরে শেষ করে দিতে।

ভয়াবহ ওই হামলায় শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হয় প্রায় ৪শ জন।

ভয়াবহ এ ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তৎকালীন রিকশা শ্রমিক লীগের নেতা মো.ইনসুর আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আমার সমস্ত শরীর শিউরে উঠছে। এমন বিভীষিকাময় পরিবেশ আমি জীবনেও দেখিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি গ্রেনেড হামলায় আহত মানুষগুলো কীভাবে পাখির মতো ছটফট করে মারা যাচ্ছিল। আমি নিজেও অনেক আহতদের রিকশায় উঠিয়ে দেই। সেই সময় পুলিশের ভূমিকা ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তৎকালীন সময়ে হাসপাতালেও আহতরা সুচিকিৎসা পায়নি। আমি চাই এই হামলার সঙ্গে যে নরপশুরা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ সাজা যেন ফাঁসি হয়।’

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মো.কিরণ বলেন, ‘মঞ্চের সামনে যে গ্রেনেডটি ছিল সেটি বিস্ফোরণ না হওয়াতে জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে যান। ওই সময় কতো মানুষের আহাজারি, চিৎকার, কান্না ও বাঁচার আকুতি ছিল তা বলে বোঝানো যাবে না। কতো লাশ যে পুলিশের পিকআপে তুলে দিয়েছি। আমি চাই এই ভয়াবহ হামলায় যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি হোক।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট শনিবার তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে জার্মানির তৈরি আর্জেস গ্রেনেড দিয়ে ভয়াবহ হামলা করা হয়। হামলায় শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ সারির নেতাসহ ২৪ জন মারা যান। কয়েক শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হন। যারা এখনও শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে যন্ত্রণাকাতর জীবন পার করছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর