অবৈধ দখল উচ্ছেদের নোটিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা | 2023-08-25 15:16:40

বরগুনার তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা বাজারের ১২৪টি অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা ৭দিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছিলো জেলা প্রশাসন। এই নোটিশ দেওয়ার প্রায় ৬ মাস পার হলেও সরিয়ে নেওয়া হয়নি স্থাপনা। উল্টো নোটিশ কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধ স্থাপনা টিকিয়ে রাখতে গঠন করা হয়েছে প্রতিরোধ কমিটি।

জানা যায়, উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা খালের পাড়ে প্রতি রোববার বাজার বসে। এই বাজারে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। গত ৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে এই বাজারের পাশে কচুপাত্রা খালের দু’পাড় স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে নেয়। খালের দু’পাড়ে দু’শতাধিক দোকান ঘর নির্মাণ করেছে তারা। দোকান ও ইমারত নির্মাণ করায় একাধারে খাল সংকুচিত হচ্ছে, অন্যদিকে নাব্যতা কমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে খালটি। নাব্যতা কমে যাওয়ায় খালে নৌকা চলাচল করতে পারছে না। খালটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বাজারে নিয়ে আসতে সমস্যা হচ্ছে। খালটির অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে সংস্কারের দাবি জানান এলাকাবাসী।

বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়দেও দাবিতে গত বছরের ১৬ নভেম্বর জেলা প্রশাসন থেকে খালের পাড় থাকা ১২৪টি অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থপানা ৭দিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হয়। সরিয়ে নেওয়া ত দূরের কথা দখলদারা নোটিশের তোয়াক্কা না করে দখল টিকিয়ে রাখার জন্য করেছে প্রতিরোধ কমিটি। এ কমিটির সভাপতি করা হয় পাশবর্তী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার(কাজি) ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃজালাল হোসেনকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় মোঃ কাওছার হোসেনকে নির্বাচিত করেন। এ কমিটিতে দখলদার ১২৪ জনই সদস্য রয়েছে। এদিকে স্থানীয়দের দাবি ১২৪ জন দখলদারের জন্য এতো বড় একটি খাল মরা খালে পরিণত হতে পারে না। তাই দ্রুত দখল উচ্ছেদ করে খালের নাব্যতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন তারা।

রোববার(৯ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,খালের দু’পাড়ে বড়বড় দোকান ঘর ও ইমারত নির্মাণ করে বসবাস করছে দখলদাররা। এরই মধ্যে কয়েক জন প্রভাবশালী ইমারত নির্মাণ করেছের খালের মধ্যে। এছাড়াও প্রায় দু’শতাধিক দখলদার অবৈধভাবে খাল দখল করে দোকান-ঘর ও ইমারত নির্মাণ করেছে।

খাল দখল নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক লোক জানান, দখলের কারণে খালের নাব্যতা হারিয়েছে, খাল সংকুচিত হয়ে গেছে। খালে নৌকা চলাচল করতে না পারায় বাজারে আসা লোকজন নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে আসতে পারছেনা। তারা অবৈধ দখল মুক্ত করে খাল সংস্কারের দাবি জানান। তারা আরও জানান, খালের মধ্যে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করায় খালের নাব্যতা কমে গেছে। অবৈধ দখল মুক্ত করে খালটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

এবিষয়ে দখল টিকিয়ে রাখার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও পচাকোড়ালিয়া নিকাহ রেজিষ্টার (কাজি) মো. জালাল উদ্দিন কে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরে নি।

দখল টিকিয়ে রাখার প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কাওছার হাওলাদার বলেন, দখল টিকিয়ে রাখার জন্য কমিটি হয়নি তবে ১২৪টি দোকান ও বাসা বাড়ির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে স্থায়ী কিছু করা যায় কি না তার জন্য করা হয় এ কমিটি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওছার হোসেন বলেন, নোটিশের ৭ দিনের ভিতরে দখলদারদের অবৈধ স্থপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিলো। কিন্তু দখলদাররা তা সড়িয়ে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করেনি। তাই জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে দখল মুক্ত করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর