ঈদেও ক্রেতা শূন্য রংপুরের বেনারসি পল্লী!

, জাতীয়

আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-09-01 03:31:11

ঈদকে ঘিরে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ছোট-বড় বিপণিবিতানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা চললেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে রংপুর বেনারসি পল্লীর ঈদের বাজারে। গত কয়েক দিন থেকে ক্রেতা ছাড়াই অলস সময় কাটাচ্ছেন দোকান মালিক-কর্মচারীরা। ফলে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও ব্যবসা করতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

ঈদ উৎসবে তরুণ-তরুণীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে হাল ফ্যাশনের থ্রি পিস, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট। তবে বিয়ে-বৌভাতসহ নানা অনুষ্ঠানে ও মধ্যবয়সী নারীদের ঈদ কেনাকাটায় অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে শাড়ি। এখানকার তৈরি রাঙুলি, চুন্দরি, নেট, ঝুট ও কোটাসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি নারীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়।

রংপুর শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে গঙ্গাচড়া উপজেলার হাবু বেনারসি পল্লী। ঐতিহ্যবাহী এই পল্লীকে ঘিরে ছোট-বড় বেশকিছু দোকান গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর ঈদের সময়ে দোকানগুলোতে প্রচুর ভিড় থাকলেও এবছর তেমন নেই। করোনার কারণে বিনিয়োগ করা অর্থও উঠবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন বিক্রেতারা।

তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে তারা অর্থ সংকটের মধ্যে আছেন। সারা বছর টুকটাক খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হলেও এখন সেটিও নেই। রংপুর শহর ছাড়াও আশপাশের জেলা শহর থেকে লোকজন শাড়ি-থ্রিপিস কিনতে আসতেন, কিন্তু এবার সেই ক্রেতারাও আসেননি। সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের শিল্পের জন্য প্রণোদনা দিলেও তাদের ভাগ্যে তা জোটেনি। বাধ্য হয়ে অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছিলেন। প্রত্যাশা ছিল, ভালো ব্যবসা করে ব্যাংক ঋণ শোধ করবেন। আবারও ঘুরে দাঁড়াবে ব্যবসা। কিন্তু ক্রেতার অভাবে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

বিক্রয়কর্মী সাজু মিয়া বলেন, আগে ঈদের সময় দম ফেলানোর ফুসরত ছিল না। করোনার কারণে এবার বিক্রি একেবারে নেই।

তাঁতিরা জানান, সারা বছরই তারা শাড়ি তৈরি করেন। এ ক্ষেত্রে ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ক্রেতার পছন্দে শাড়ি তৈরি করেও এবার ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আগে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা দামের শাড়ির প্রচুর চাহিদা ছিল। এবার নেই বললেই চলে।

ফলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা নিয়ে তাদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর