মিশরে হাজার বছরের পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে পিএইচপি

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 10:17:23

পৃথিবীর বিখ্যাত ও ঐতিহ্যবাহী মিশরের রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত আল আজহার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ থেকে ছাত্র পাঠাবে দেশের নামকরা শিল্প প্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলি। বিশ্বের প্রাচীনতম প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চট্টগ্রামের কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে পাশ করা মেধাবী ছাত্রদের পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে এ শিল্প প্রতিষ্ঠানটি।

আগামী শিক্ষাবর্ষে ছাত্র পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের নতুন সূচনা হবে পৃথিবীর ঐতিহ্যবাহী ইসলামীক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও অনেক বাংলাদেশী পড়তে গিয়েছিলেন। আগামীতে নামকরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এক সাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি হলো বাংলাদেশের। ইতিমধ্যে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও ঢাকা সফর করে গেছেন।

৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর তৃতীয় প্রাচীনতম ইসলামিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুমানিক ২০ লাখ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এদের পাঠদানের জন্য শিক্ষক আছেন ৮০ হাজার। বিশ্বের ধনী মুসলিম রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান ও ধণাঢ্য ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় বিনামূল্যে পরিচালিত হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু  থাকা-খাওয়া খরচ বাবদ একজন শিক্ষার্থীর খরচ পড়ে বাংলাদেশী টাকায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিএইচপির ফ্যামিলির পরিচালক আলী হোসেন চৌধুরী সোহাগ বলেন, ‘আমার বাবা সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিশর সফরে গিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন কয়েক মাসে আগে। এর পাঠদান পদ্ধতি, পরিচালনার কৌশল ও পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ দেখে যারপরনাই মুগ্ধ হয়েছেন। এর কয়েক সপ্তাহ পর তিনি আবার পরিদর্শনে যান আল আজহার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চট্টগ্রামের শাহদায়ে কারবালার মাহফিলে। তারা বাংলাদেশ থেকে ছাত্র নেয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।’

চট্টগ্রামের কলেজ ও মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রদের বাছাই করে আগামী বছর থেকে মিশরে পাঠানো হবে। যাতায়াত ভাড়া বহন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। মিশরে থাকা ও খাওয়ার খরচ বহন করবে সুফি মিজান ফাউন্ডেশন।

এর মধ্যে সুফি মিজানুর রহমানের দেওয়া ভবনে ঢাকার কাকরাইলে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা কেন্দ্র খোলা হবে। ইতিমধ্যে এ জায়গা পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত। শিক্ষা ও গবেষণা কাজে ব্যবহৃত হবে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের এই ইউনিটটি।

প্রায় এক হাজার বছরের এই প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর নিযুক্ত হোন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বংশধররাই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মিশরের রাষ্ট্র প্রধানের মতোই সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অধিকার রয়েছে। এমনকি মিশরের নতুন কোনো আইন প্রতিষ্ঠার জন্য এই চ্যান্সেলরের মতামত নেয়া বাধ্যতামূলক। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আরবি ছাড়াও বিজ্ঞান, কলা, চিকিৎসাবিজ্ঞানসহ সবধরনের আধুনিক পাঠদানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, ৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৮০টি কলেজ রয়েছে। ১৫০টি দেশের ৪০ হাজারের বেশি বিদেশী ছাত্রছাত্রী। ১৯৩০ সাল থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের প্রথম ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর