মহাসড়কে গণপরিবহনের বিকল্প ট্রাক ও পিকআপ

, জাতীয়

মহিউদ্দিন আহমেদ | 2023-09-01 18:39:12

নানা বিধি নিষেধ থাকলেও ঈদের আগের দিন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা ছেড়েছে বহু সংখ্যক মানুষ। আর এখন ঈদ গত হওয়ায় সেই সব মানুষ আবার ফিরতে শুরু করেছে ঢাকাতে। যদিও গণপরিবহন এখনো চলছে না কিন্তু তাতে মোটেও কমছে না ঢাকামুখী মানুষের ঢল।

সোমবার (১৭ মে) কুমিল্লা থেকে রাজধানীর সায়েদাবাদ পর্যন্ত সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে দেখা যায় ভোর থেকেই ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে। সড়কে অল্প কিছু ছোট বাস চললেও সেগুলো যাত্রীর সংখ্যার তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

মহাসড়কে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সিএনজি চলছে এলাকা ভিত্তিক ভাবে। সিএনজিগুলো একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত যাত্রী বহন করছে। তবে গণপরিবহনের জায়গা নিয়েছে মূলত ট্রাক ও পিকআপ। মালামাল পরিবহনের এই যান এখন ঢাকামুখী মানুষের একমাত্র ভরসা। কোন কোন ট্রাক পিকআপ কুমিল্লা থেকে যাত্রী নিয়ে কাঁচপুর কিংবা সাইনবোর্ড এসে থামছে। পথে পুলিশি বাঁধা পেলে কখনো তারও আগে যাত্রী নামিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। তবে এর মধ্যে কেউ কেউ সুযোগ পেলে সায়েদাবাদ, গুলিস্তানাও চলে আসছে।

যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা একটি পিকআপ এ আগে থেকে চড়ে বসা একজন যাত্রী মো. মিলনের সাথে কথা হয় বার্তা২৪.কম এর। কেন এভাবে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যাওয়া তো লাগবোই। তাই যেমনে পারতাছি যাইতাছি। এই গাড়ি কাঁচপুর পর্যন্ত যাইবো। তারপর ক্যামনে যামু সেইডা আরেক ঝামেলা।'

এদিকে পরিবার নিয়ে দাউদকান্দি ব্রীজের পাশেই গাড়ির অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছেন মোকাব্বর আলী। তিনি কিছুটা উদ্বিগ্ন। ঘণ্টা খানেক হলো দাড়িয়ে আছেন কিন্তু এখনও যাওয়ার জন্য কোন গাড়ি পাননি। পাবেন কিনা সেটাও বুঝতে পারছেন না। কিন্তু আজকে তাকে যেতেই হবে, কারণ কাল থেকে অফিস করতে হবে। শেষ ভরসা হিসেবে তিনি এখন অপেক্ষায় আছেন কোন ট্রাক বা পিকআপ এ পরিবার নিয়ে উঠার সুযোগের।

ভোর থেকেই মহাসড়ক জুড়ে ব্যাপক পরিমাণ প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকা ফিরছেন। কেউবা প্রাইভেট কার ভাড়া করেছেন। আবার অনেকে মাইক্রোবাসের মত যানে কয়েকজন মিলে শেয়ারে ঢাকার পথ ধরেছেন। তবে এসব যানে সাধারণ সময়ের তুলনায় বর্তমানে দেড় থেকে দুই গুন পর্যন্ত বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। অনেকে আবার মোটরসাইকেলের মত দুই চাকার যানে পাড়ি দিচ্ছেন দীর্ঘ পথ। স্বপরিবারেও অনেকে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছেন মোটরসাইকেলে করে।

কাঁচপুর ব্রীজের কিছুটা আগে পিকআপ থেকে যাত্রী নামাচ্ছিলেন ড্রাইভার শরীফ। তিনি কুমিল্লার চান্দিনা থেকে কয়েকজন যাত্রী নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন কিন্তু এখান পর্যন্ত আসতে তার গাড়িতে উঠে বসেছে ২৭জন যাত্রী। আরও মানুষ উঠতে চেয়েছে কিন্তু গাড়িতে দাড়ানোর তিল ধারণের জায়গাটুকু না থাকায় আর কাউকে উঠানো সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ভাড়া উঠানোর কাজ করেছে যাত্রীদের মধ্য থেকেই একজন। যাত্রীদের সবাই খুশি এতটুকু পর্যন্ত আসতে পেরে।

পথে কোন সমস্যা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে শরীফ বার্তা২৪.কম কে বলেন, ‘সমস্যা তো কিছু অইবোই। কিন্তু আইতে তো ওইবো। এক মাস বওয়া আছিলাম। আইজকা প্রতথম কিছু ইনকাম হইলো। আর মাইনষের কত উপকার অইলো বলেন।‘

যে করোনার জন্য এতকিছু, এত পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার, সেই স্বাস্থ্যবিধি মহাসড়কে কিছুটা উপেক্ষিত বলেই দেখা গেছে সরেজমিনে। মানুষজন অনেকটা বাধ্য হয়েই ট্রাক ও পিকআপে গায়ে গাঁ ঘেঁষে দীর্ঘ সময় যাত্রা করছে। তবে মুখে মাস্ক দেখা গেছে বেশির ভাগ যাত্রীর। অনেকের মাস্ক দেখা গেছে তাদের হাতে,পকেটে কিংবা থুতনির নীচে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর