নারায়ণগঞ্জে রোজিনার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 12:48:39

প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলাম দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করার কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অন্যায়ভাবে অবরুদ্ধ রেখে নির্যাতন করেছে। শুধু তাই নয় শতবছরের পুরোনো অফিসিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের মামলায় তাকে আসামি করে জেলে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেলে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সুবর্ণগ্রাম সংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

এ সময় তারা আরও বলেন, দুর্নীতির তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরাই সাংবাদিকদের কাজ। দুর্নীতির খবর কেউ আপনা-আপনি দেয় না।

সংগঠনের সভাপতি কবি শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আমির হুসাইন স্মিথ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের সাংবাদিক আফসার বিপুল, প্রথম আলোর সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী শিমুল, কবি কাজল কানন, সমগীত সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিষ্ঠাতা অমল আকাশ, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আবু নাঈম বিপ্লব, নারী সংহতি আন্দোলনের সম্পাদক পপি রাণী সরকার প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা বরাবরই দুর্নীতির চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরেন। এজন্য তাদের সমাজের আয়না বলা হয়। এই দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ করায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা, মামলার শিকার হয়েছেন। তবে এতে দমে যায়নি সাংবাদিকরা। তারা অন্যায়কারীদের দাসত্ব কখনও মেনে নেয়নি। প্রকৃত সত্য উন্মোচন করার জন্য তাদের চোর বলে সম্বোধন করা হলেও তাতে ক্ষতি নেই। বারবার নির্যাতিত হবে তবুও লিখবে। এটাই তাদের কাজ। সুতরাং দুর্নীতিবাজ আমলারা সময় থাকতে শুধরে যান।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় আটক রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। তারা রোজিনার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে করা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।

বক্তারা আরও বলেন, আটক রেখে নির্যাতন করা সন্ত্রাসী, গডফাদারদের কাজ। সন্ত্রাসীদের মতো কাজ এখন করছে সরকারি আমলারা। সরকারের সচিবরা সাংবাদিকদের আটকে রেখে নির্যাতন করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। এইসব কর্মকাণ্ড নিন্দনীয়। সরকারের এই দমননীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার রোজিনা ইসলামের জামিন শুনানি হলেও আদেশ না হওয়াতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মানববন্ধনে বক্তব্য রাখা ব্যক্তিরা। তারা বলেন, যেই আইনে রোজিনাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, সাংবাদিক হিসেবে সেই আইন তার উপর খাটে না। তারপরও তিনি এই মামলায় জামিনের যোগ্য। আজ জামিন শুনানি হলেও আদালত আদেশের জন্য রোববার সময় রাখলেন। কারণ উপর মহলের আদেশ আদালতকেও মানতে হচ্ছে। পুলিশের উপর থেকে মানুষের ভরসা আগে থেকেই উঠে গেছে। এখন বিচার বিভাগের উপর থেকেও ভরসা উঠে যাচ্ছে। এর পরিবর্তন না করতে পারলে কারও মুক্তি নেই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর