ঠাকুরগাঁওয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ১

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও | 2023-08-25 23:36:07

ঠাকুরগাঁওয়ে হরিপুরে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে ইউএনও’র শ্যালকের বিরুদ্ধে। টাকা ফেরত না দেওয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঘর বঞ্চিত অসহায় পরিবারের লোকজন ও উৎসুক জনতা আবুল কালাম আজাদ নামে একজন আটকের পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় হরিপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর-৫, তাং-৯.৬.২১ দণ্ডবিধি ৪০৬/৪২০।

মঙ্গলবার (৮ জুন) রাতে জেলার হরিপুর উপজেলা ভাতুরিয়া রামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, সরকারি ঘর বরাদ্দের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের রামপুর গৃহায়ন প্রকল্প এলাকা থেকে আটকের পর তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আবুল কালাম আজাদ জানায় সে হরিপুর ইউএনও’র আওতায় সরকারি প্রকল্পের ঘর তৈরির মালামাল সরবরাহের দায়িত্ব ছিল। সেই সুযোগে ইউএনও’র শ্যালক তানবিন হাসান ঘর বরাদ্দের নাম করে আবুল কালাম আজাদকে দিয়ে ওই এলাকার প্রায় ৮-৯ জনের কাছে ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা গ্রহণ করে।

এ বিষয়ে ভুক্তভুগী সাইদুল ইসলাম বাদি হয়ে হরিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদি সাইদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমরা অসহায় মানুষ আবুল কালাম আজাদ ঘর নির্মাণের কাজে দেখভালের দায়িত্বে ছিল। আর ইউএনও’র শ্যালক তানবিন প্রকল্প এলাকায় নিয়মিত আসা যাওয়া করতো। আমাদের ৯ জনকে ঘর দেয়ার কথা বললে আমরা ঋণ করে তাদের কথামত আবুল কালাম আজাদকে টাকা দেই শুধু ঠাই পাওয়ার আশায়। আমরা নিশ্চিত ছিলাম যেহেতু ইউএনও’র শ্যালক টাকা দিতে বলেছে ঘর পাবো। কিন্তু ঘর বরাদ্দের ফাইনাল তালিকায় আমাদের নাম না থাকায়। তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে কাল ক্ষেপণ করে। পরে আবুল কালাম আজাদকে সবাই আটক করে পুলিশে দেয়। আমরা আমাদের টাকা ফেরতের পাশাপাশি তারা আরো অনেক ব্যক্তির কাছে টাকা নিয়েছে তা তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।

রামপুর গ্রামের জহুরা খাতুন বলেন, আমি ঘর নেওয়ার জন্য ইউএনওর শ্যালককে ১৫ হাজার টাকা জমি বিক্রয় করে দিয়েছি। আমার শেষ সম্বল জমিটুকু আমি বিক্রয় করে দেই। কিন্তু উনি ঘর দিতে টালবাহানা করে তাই উনার সহযোগী সহ উনাকে আটক করি আমরা।

ওই গ্রামের সফিউর রহমান বলেন, আমাকে ইউএনওর শ্যালকের সহযোগী আবুল কালাম আজাদ ঘর দিতে চায়। তার বদলে আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা চায়। কিন্তু আমি এত টাকা কোথায় পাবো তাই আমার গরু বিক্রি করে ২৫ হাজার টাকা দেই। এখন আমার গরুও নাই আমাকে ঘরও দিচ্ছে না।

হরিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, আইন সকলের জন্য সমান। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধী যে কেউ  হোক না কেন তার যা শাস্তি তাকে পেতেই হবে।

এ বিষয়ে হরিপুর থানার ওসি এস এম আওরঙ্গজেব জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটক আবুল কালাম আজাদ অর্থ নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। আর ইউএনও’র শ্যালক তাকে ঘর বরাদ্দের জন্য স্থানীয়দের কাছে টাকা নেয়ার নির্দেশ দেয় বলে স্বীকার করে। মামলার এজাহারে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা হয়েছে। আর অর্থ লেনদেনের সাথে জড়িতের অভিযোগে ইউএনও’র শ্যালক তানবিনের নাম সন্দেহজনকভাবে এজাহারের ভিতরে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার তদন্তে সব বেড়িয়ে আসবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর