সবজি'র ভাণ্ডার গাইবান্ধায় নেই হিমাগার

, জাতীয়

তোফায়েল হোসেন জাকির, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-26 03:55:23

সবজি'র ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত জেলা গাইবান্ধা। এ জেলায় বার্ষিক প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদার তুলনায় অধিক। আর এই অধিক সবজিগুলো সংরক্ষণে জন্য হিমাগার না থাকায় বেশির ভাগ সময় এগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

জানা যায়, কৃষি নির্ভরশীল জেলা গাইবান্ধার সাতটি উপজেলার কৃষকরা ধান-পাট-ভুট্টার পাশাপাশি চাষ করেন চাহিদা সম্পন্ন সব ধরনের সবজি। বিশেষ করে জেলার সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপাদন করে আসছেন। প্রাচীনকাল থেকে এখানকার জীবিকার মূল উৎস কৃষি কাজ। তাই রবি ও খরিপ মৌসুমে বিস্তৃর্ণ অঞ্চল জুড়ে নজরকাড়ে আলু, কপি, বেগুন, লাউ, করলা, পটল, মরিচ, শসা, ঢেঁড়স, কচু, গাজরসহ আরও নানা প্রকারের শাক-সবজি। স্থানীয়ভাবে এসব সবজি উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা কম রয়েছে।

এ জেলায় আলু সংরক্ষণে বেশ কিছু হিমাগার থাকলেও অন্যান্য সবজি সংরক্ষণে নেই কোন হিমাগার। যার ফলে কৃষকদের কষ্টের উৎপাদিত সবজিগুলো কম দামে বিক্রি অথবা নষ্ট হয়ে যায় ক্ষেতে। যার ফলে কৃষি উন্নয়নের দেশে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাইবান্ধার কৃষক সমাজ। তাই এ জেলার সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হিমাগার স্থাপন করা হলে অনেকটাই লাভবান হবেন এখানকার কৃষকরা বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় সবজি চাষযোগ্য জমি রয়েছে ২০ হাজার হেক্টর। হিমাগার না থাকায় সবজি উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। বর্তমানে প্রতিবছরে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে সবজির। এতে উৎপাদন হচ্ছে ২ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে স্থানীয় চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

সাদুল্লাপুর এলাকার কৃষক খলিলুর রহমান জানান, রবি ও খরিপ মৌসুমে নানা জাতের সবজি আবাদ করি। চলতি মৌসুমেও ২ একর জমিতে কচু, শসা, মরিচ, বেগুনসহ আরো কয়েক প্রকারের শাক-সবজি আবাদ করেছি। অনেক সবজি উৎপাদন হয়েছে তবে সংরক্ষণে হিমাগার না থাকায় জেলার বাহিরে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর বিক্রি না করলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজিগুলো।

আরেক কৃষক জানান, এই এলাকায় আলু সংরক্ষণে হিমাগার থাকলেও অন্যান্য সবজি সংরক্ষণে হিমাগার নেই। এতে করে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলছেন। তাই এই এলাকায় হিমাগার স্থাপনের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, কৃষি উন্নয়নে জেলার বিশেষ বিশেষ পয়েন্টে হিমাগার স্থাপনের দরকার। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, এখানকার কৃষকরা প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপাদন করে যাচ্ছেন। যাতে করে কৃষকরা আরও লাভবান হতে পারেন, সেবিষয়ে হিমাগার স্থাপনের জন্য জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দাবি জানানো হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর