শার্শার সাতমাইল পশুহাটে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর) | 2023-08-27 16:53:47

করোনা মহামারির মধ্যে যশোরের শার্শা সাতমাইল পশুহাটে গবাদি পশু বেচা-কেনায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না থাকায় স্থানীয়ভাবে ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহে করোনা উপসর্গ নিয়ে এ উপজেলাতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, পশুহাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এলাকায় জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত বেড়েছে। করোনা উপসর্গ শ্বাস কষ্টে এলাকাতে প্রায়ই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। দিন দিন এ অবস্থার অবনতি হলেও নজর নেই প্রশাসনের। হাট কর্তৃপক্ষ বলছেন, পার্শ্ববর্তী উপজেলার গবাদি পশুর হাটগুলো বন্ধ হওয়ায় সাতমাইল হাটে মানুষের ভিড় বাড়ছে। এতে কিছুটা অনিয়ম হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। আর উপজেলা প্রশাসন বলছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন রকম অনিয়ম হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

জানা যায়, দেশের দক্ষিণবঙ্গের সবচেয়ে বড় গবাদি পশুহাট যশোরের শার্শা উপজেলাধীন বাগআচড়ার সাতমাইল পশুহাট। সাতমাইল গবাদি পশুহাটের ইজারাদারের দায়িত্বে রয়েছেন খতিব ধাবক নামে এক ব্যবসায়ী। সপ্তাহে দুদিন শুক্র-শনি এহাটে গরু বেচা-কেনা হয়। বছরে ৬ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আসে এ হাট থেকে। উপজেলাতে করোনা সংক্রমণের হার ৭৫ শতাংশ। বর্তমানে প্রায় ২শ জন করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়িতে বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্তের এ সংখ্যা বাড়ছে। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ব্যবসায়ী গরু কেনা-বেচা করতে জমায়েত হচ্ছেন শার্শার সাতমাইল পশুহাটে। সম্প্রতি সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাতক্ষীরা ও যশোরের কয়েকটি উপজেলায় লকডাউনে গবাদি পশু হাট বন্ধ রয়েছে। তবে সাতমাইল পশুহাট লকডাউনের আওতামুক্ত থাকায় এহাটে বন্ধ হওয়া অন্য হাটগুলোর মানুষের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু এহাটে স্বাস্থ্যবিধি মারাত্মকভাবে উপেক্ষিত হওয়ায় বেড়েছে স্থানীয়দের মাঝে করোনার সংক্রমণ। এতে অনেকটা আতঙ্কিত স্থানীয়রা।

এবিষয়ে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াজ কবীর বকুল জানান, প্রশাসন বলছেন গণজামায়েত এড়িয়ে চলতে হবে। কিন্তু সাতমাইল পশুহাট স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গণজামায়াতের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এতে স্থানীয়ভাবে ঘরে ঘরে করোনা আক্রান্ত বাড়ছে।

সাতমাইল বাজার কমিটির সভাপতি গাজী মুসা জানান, করোনা উপসর্গ শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত সপ্তাহে সাতমাইলসহ শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৬ জন মারা গেছেন। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে হাট বন্ধ রাখা উচিত।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিদ হোসেন জানান, মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় এ উপজেলাতে ৩৯ জন করোনা পজিটিভ হয়েছে। সচেতন না হলে ভয়াবহ অবস্থার আশঙ্কা রয়েছে।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মীর আলিফ রেজা জানান, সপ্তাহে দুদিন বসছে পশুর হাট। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইজারাদারদের। মাঝে মধ্যে সেখানে অভিযানও চালানো হয়। তবে অনিয়ম হলে যে কোন সময় গত বছরের ন্যায় পশুর হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর